পানি নিয়ে পরীক্ষার্থীদের কাছে ছাত্রলীগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের সুবিধায় আনা উদ্যোগের সঙ্গে প্রতিশ্রুতি মত গরমে কাতর পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সুপেয় পানিও পান করাচ্ছেন ছাত্রলীগের কর্মীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2018, 12:01 PM
Updated : 21 Sept 2018, 12:40 PM

শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বর, অপরাজেয় বাংলা, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ও কার্জন হল এলাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সুপেয় পানি নিয়ে সেবা দিতে দেখা গেছে।

এদিন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে কলা অনুষদের অধীনে ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় দুই হাজার ৩৮৩টি আসনের বিপরীতে ৩৫ হাজার ৭২৬ জন ভর্তিচ্ছু ৬৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেন।

অন্যান্য বছরের মতো এবারও শিক্ষার্থীদের সহায়তায় প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে তথ্য সহায়তা কেন্দ্রের সঙ্গে তাদেরকে দ্রুত কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে মোটর সাইকেল সেবা (জয় বাংলা বাইক সার্ভিস), অসুস্থদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম রাখা এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখার ঘোষণা দিয়েছিল সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনটি।

গত শুক্রবার প্রথম ভর্তি পরীক্ষার (‘গ’ ইউনিট) দিন থেকেই শুরু তাদের এসব সেবা।

ক্যাম্পাসের ২১টি স্থানে বসানো হয়েছে ছাত্রলীগের তথ্য প্রদান ও শিক্ষার্থী সহায়তা কেন্দ্র, যেখান থেকে ভর্তিচ্ছুরা নিজেদের আসন ব্যবস্থা, কেন্দ্রের অবস্থান ও অন্যান্য তথ্য জানতে পারছেন; পাশাপাশি সঙ্গে আনা ব্যাগ, মোবাইল ফোন ও হাতঘড়ি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে সেখানে নিরাপদে জমাও রাখতে পারছেন৷ প্রতিটি কেন্দ্রে দায়িত্ব করছেন বিভিন্ন হল ও অনুষদ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

স্বেচ্ছাসেবকদের হাতে গ্লাসে পানি ঢেলে দিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস। স্বেচ্ছাসেবকরা সেই পানির গ্লাস তুলে দিচ্ছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হাতে।

পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোর আশপাশেই রয়েছে পানি পানের ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীদের দ্রুত কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে শাহবাগ, নীলক্ষেত, দোয়েল চত্বর ও পলাশী মোড়ে ব্যবস্থা করা হয়েছে ‘জয় বাংলা বাইক সার্ভিসের’।

পুরো বিষয়টি সমন্বয় করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন।

ছাত্রলীগের এই উদ্যোগকে ‘মানবিক রাজনীতির’ পথে এগিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন শুক্রবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।

আফসানা চৌধুরী নামে পরীক্ষার্থী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভাইয়ারা ডেকে ডেকে সবাইকে পানি খাওয়াচ্ছেন, বিষয়টি দেখতেই ভালো লাগছে। উনারা রাজনীতি করেন, বর্তমান রাজনীতিকে আমরা অনেকেই নেতিবাচকভাবে দেখি। তবে পরীক্ষা দিতে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইয়া-আপুদের যে আন্তরিকতা দেখলাম তা এক কথায় অসাধারণ৷ আমরা চাই সবাই এমন রাজনীতিই করুক।”

আফসানার বাবাও ছাত্রলীগের এ ধরনের সেবামূলক কর্মকাণ্ডে খুশি।

তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ের অনেক কার্যক্রমে ছাত্ররাজনীতির প্রতি একটা বিরক্তি কাজ করছিল। তবে ছাত্রদের এরকম মানবিক কাজ করতে দেখলে খুব ভালো লাগে৷ এই ধরনের ইতিবাচক মানসিকতার সংগঠন আমরা চাই।”

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, “আসলে এটা বাহবা দেওয়ার মতো কোনো কাজ না। আমি আমার দায়িত্বের জায়গা থেকেই এ কাজ করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে একটা দায়িত্ব দিয়েছেন, আমরা চেষ্টা করছি নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে সেটা পালন করতে।

“তাছাড়া আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে যে সমস্যায় পড়েছিলাম আমি চাই না আমার কোনো ছোটভাই বা উত্তরসূরি সেই সমস্যায় পড়ুক। এটাকে আমি আসলেই বাহবা দেওয়ার মতো কিছু মনে করি না, দায়িত্ব মনে করি।”