রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফেরত পাঠাতে চাই: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2018, 06:22 PM
Updated : 19 Sept 2018, 06:22 PM

জাতীয় সংসদে বুধবারের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলঅম মিলনের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে চাই।”

আওয়ামী লীগ সরকারের গ্রহণ করা কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিজেদের ভূমিতে নিরাপদ, সম্মানজনক ও টেকসই প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে বলেও আশাপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

১১ লাখ রোহিঙ্গার অবস্থানের কারণে কক্সবাজারসহ আশপাশের জনগোষ্ঠী ও প্রতিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কথাও বলেন তিনি।

“বনভূমি উজার ও পাহাড় কাটার কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। ডিপথেরিয়া, পোলিও, এইচআইভিসহ নানা সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে মানবপাচার, মাদকদ্রব্য চোরাচালানসহ সংঘবদ্ধ অন্যান্য অপরাধের ঝুঁকি বেড়েছে।”

রোহিঙ্গাদের স্থায়ী ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে তিনটি চুক্তি সই হয়েছে। পাশাপাশি মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য দ্বি-পাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।”

রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের অনাগ্রহের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে থাকার কোনো সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাধ্য হবে।

“মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগে চীন, সোভিয়েত রাশিয়া, ভারতসহ সকলের থেকে আমরা ভালোই সাড়া পেয়েছি।

“চাপটা সবাই দিচ্ছে। কেউ সরাসরি চাপ দিচ্ছেন। কেউ প্রকাশ্যে দিচ্ছেন, কেউ ভেতরে দিচ্ছেন।  হয়ত তাদের কূটনৈতিক কোনো পরিকল্পনার কারণে প্রকাশ্যে তারা এভাবে চাপ দেয়নি।”

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য চীন ও ভারতের ঘরবাড়ি তৈরি করে দেওয়ার কথাও জানান শেখ হাসিনা।

জাতিসংঘের আসছে সাধারণ পরিষদের বৈঠকে রোহিঙ্গা সঙ্কটের উপর জোর দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।

“জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে এ সমস্যার অগ্রগতি পর্যালোচনাসহ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আমরা বিভিন্ন সভায় তুলে ধরব। এছাড়া অধিবেশনের সাইডলাইনে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের কূটনৈতিক সাফল্য এইটুকু যে আমরা আন্তর্জাতিক জনমত সৃষ্টি করতে পেরেছি। এখন সারা বিশ্ব মনে করে, রোহিঙ্গাদের উপর অন্যায় হয়েছে এবং তাদের নিজ দেশে ফেরত নেওয়া মিয়ানমারের কর্তব্য।

“বিমসটেক সম্মেলনে আমার সাথে মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতির ঘরোয়াভাবে কথা হয়েছে। তিনি রোহিঙ্গাদের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। বলেছেন তারা ফেরত নেবেন। আশা করি, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাধ্য হবে।”