একাত্তরে গণহত্যায় জড়িতদের মনোনয়ন না দেওয়ার আহ্বান

দেশের সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায় যেন অবাধ ও নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে সেজন্য একাত্তরে গণহত্যায় সম্পৃক্তদের নির্বাচনে মনোনয়ন না দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতারা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2018, 04:17 PM
Updated : 18 Sept 2018, 04:17 PM

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সরকার, রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন কমিশনের করণীয় সম্পর্কে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই আহ্বান জানান।

সংগঠনটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, “একাত্তরে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে, তাদের মনোনয়ন দেওয়া যাবে না।”

গণহত্যার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সন্তান পিতার অপরাধের জন্য যদি অনুতপ্ত না হয় এবং এর জন্য শহীদ পরিবার ও জাতির কাছে ক্ষমা না চায়, তাহলে তাদেরও মনোনয়ন না দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এছাড়া চোরাচালান, মাদক ব্যবসা ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদেরও মনোনয়ন না দেওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি।

২০০১ সালে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে দেশকে হিন্দুশূণ্য করেছিল বলে উল্লেখ করে শাহরিয়ার কবির বলেন, “২০০৯ সাল থেকে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ১৪ দলীয় মহাজোট ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা-নির্যাতন বন্ধ হয়নি।”

অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াত এসব হামলার জন্য দায়ী বলে অভিযোগ পাওয়া গেলেও বহু এলাকায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মী ও সরকার দলীয় সাংসদরাও দায়ী বলে অভিযোগ পাওয়ার কথা জানান তিনি।

বর্তমান সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলায় অভিযুক্ত সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে উল্লেখ করে তিনি।

সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঘটনা গুরুত্বের সাথে প্রচারের জন্য সংবাদ মাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান শাহরিয়ার কবির।

নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন জামায়াতে ইসলামীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “যাদের রাজনৈতিক নিবন্ধন নেই, নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে, কিন্তু তারা প্রকাশ্যে নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যথার্থ ভূমিকা পালন করতে পারছে না।”

সংগঠনটির আইন সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, “আমাদের দেশে নির্বাচন আসলেই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভীতি ছড়ানো হয়। ফলে তারা নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে ভোট দিতে পারে না। আমরা চাই সবাই তার নিজের পছন্দের মানুষকে ভোট দিতে পারুক।  

“প্রচলিত আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে নির্বাচনের সময় কিংবা অন্য সময় ও সাম্প্রদায়িক নির্যাতন বন্ধ করা যাচ্ছে না। তাই ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন করা উচিত।”

নির্বাচনের আগে এই আইন প্রণয়ন সম্ভব না হলে প্রচলিত সন্ত্রাস দমন আইনে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানান তিনি।

সংবাদ স‌ম্মেল‌নে আরও উপ‌স্থিত ছি‌লেন শহীদ জায়া শ্যাম‌লী নাসরিন চৌধুরী, মু‌ক্তি‌যোদ্ধা আমজাদ হো‌সেন প্রমুখ।