আত্মসাৎ: মামলা হচ্ছে ঢাকা মেডিকেলের ৬ কর্মীর বিরুদ্ধে

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের টিকেট বিক্রির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ওই বিভাগের ইনচার্জসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আলাদা আলাদা মামলা করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2018, 12:07 PM
Updated : 18 Sept 2018, 12:07 PM

মঙ্গলবার কমিশন থেকে এসব মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুদকের অনুসন্ধানে ওই ছয়জনের বিরুদ্ধে মোট ৫৯ লাখ ১০ হাজার ৬০১ টাকা আত্মাসাৎ করার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।

দুদকের মামলায় যাদেরকে আসামি করা হচ্ছে তারা হলেন- হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ (বরখাস্ত) মো. আজিজুল হক ভুইয়া (বর্তমানে প্রশাসনিকে সংযুক্ত), সাবেক এমএলএসএস মো. আলমগীর হোসেন (বর্তমানে ক্যাশিয়ার), সাবেক এমএলএসএস মো. আব্দুল বাতেন সরকার (বর্তমানে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর), সাবেক অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক ও ক্যাশিয়ার মো. শাহজাহান, সাবেক এমএলএসএস মো. আবু হানিফ ভুইয়া এবং জরুরি বিভাগের অফিস সহকারী মো. হারুনর রশিদ।

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজিজুল হক ভুইয়া হাসপাতালের জরুরি আট লাখ ৩৮ হাজার ৬৬৮টি টিকেট ৮১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৮৫ টাকায় বিক্রি করেছিলেন।

পরে তিনি ওই টাকার মধ্যে থেকে ৬৬ লাখ ১৫ হাজার ৯৩০ টাকা সরকারি খাতে জমা করলেও ১৫ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫৫ টাকা জমা করেননি।

অপরদিকে তিনি জরুরি বিভাগে রোগী ভর্তি করে ৩৮ লাখ ৩৮ হাজার ২২৭ টাকা আদায় করেন। এর মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন ২৩ লাখ ৪৭ হাজার ২৮১ টাকা। এখানেও তিনি ১৪ লাখ ৯০ হাজার ৯৪৬ টাকা কম জমা করেননি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

আজিজুল হক অর্থ আত্মসাতের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট আলামতও নষ্ট করেছেন বলে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে এসেছে।

মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে (২০০৯ থেকে ২০১০ সাল) ১৫ হাজার টিকেট বিক্রি করে দেড় লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

আবু হানিফ ভুইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গত ২০০৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ২৮ হাজার টিকেট বিক্রি করে দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।

হারুনর রশিদ গত ২০০৯-২০১০ থেকে ২০১২-১৩ সাল পর্যন্ত এক লাখ ১৫ হাজার টিকেট বিক্রি করে ১১ লাখ ৫০ হাজার আত্মসাৎ করেন বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

আলমগীর হোসেন গত ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ২৮ হাজার টিকিট বিক্রি করে দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রতিবেদেন উল্লেখ করা হয়।

অন্যদিকে আব্দুল বাতেন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি জরুরি বিভাগে ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে গত ২০০৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত এক লাখ টিকেট বিক্রি করে ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়।

সরকারের এসব অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ২০১ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে জানান দুদক কর্মকর্তা প্রণব ভট্টাচার্য্য।