নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার ওসি মোরশেদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এক রিকশাওয়ালা বৃহস্পতিবার রাতে আসাদুল্লাহকে থানায় নিয়ে আসেন। আসাদুল্লাহর দাবি, তাকে কেউ নারায়ণগঞ্জে ফেলে রেখে গেছে।
“তাকে ডাক্তার দেখিয়ে আমরা সরাইল পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি। তিনি সুস্থ আছেন। তাকে গুম করে হত্যা করার অভিযোগে সরাইল থানায় একটি মামলা আছে।”
ঘটনার শুরু গত ৫ অগাস্ট। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের বাসিন্দ আসাদুল্লাহ সেদিন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
সেখানে বলা হয়, অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কাপ্তান মিয়ার সঙ্গে তার জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এর জেরে তারা তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন।
পুলিশ ৬ সেপ্টেম্বর অরুয়াইল ও সরাইল থানার মাঝামাঝি এলাকার চুন্টা কৈবর্তপাড়ার একটি বিল থেকে অর্ধগলিত এক যুবকের লাশ উদ্ধার করলে সেটি আসাদুল্লাহর মরদেহ হিসেবে শনাক্ত করেন তার পরিবারের সদস্যরা। ময়নাতদন্তের পর সেই লাশ নিয়ে গিয়ে তারা গ্রামের বাড়িতে দাফন করেন।
দাফনের পরদিন আসাদুল্লাহকে অপহরণের পর হত্যা এবং লাশ বিলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ এনে সরাইল থানায় মামলা করেন তার মেয়ে মোমেনা। সেখানে শফিকুল ইসলাম ও কাপ্তান মিয়াসহ সাত জনকে আসামি করা হয়।
জিডি হওয়ার এক মাস ১০ দিন পর আসাদুল্লাহর খোঁজ মিললে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে মোমেনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
তিনি বলেন, “শুনেছি নারায়ণগঞ্জে আব্বাকে নাকি পাওয়া গেছে। আব্বা এখন পুলিশের কাছে আছে। আমরা এখন গ্রামের বাড়িতেই আছি।”
সরাইল থানার ওসি মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আসাদুল্লাহ ধূর্ত প্রকৃতির লোক। তাকে নারায়ণগঞ্জে পাওয়া গেছে। তাকে আনার জন্য ফোর্স পাঠিয়েছি।”
ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সরাইল থানার এসআই জাকির হোসেন খন্দকার বলেন, “সোনারগাঁও থানা হেফাজতে থাকা আসাদুল্লাহর সাথে মোবাইলে আমার কথা হয়েছে, সে আসাদুল্লাহই। আমরা সেখানে যাচ্ছি।”
আসাদুল্লাহকে ‘গুমের’ মামলার প্রধান আসামি শফিকুল ইসলামের অভিযোগ, ‘নাটকীয়’ এ ঘটনার সঙ্গে তৃতীয়পক্ষ জড়িত।
শফিকুল বলছেন, তিনি ‘দুর্নীতির’ প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে মোশাররফ তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন। একই ধরনের কথা বলেছেন মামলার আরেক আসামি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাপ্তান।
তিনি বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি, কিন্তু লাশের রাজনীতি করি না। আমাদেরকে রাজনৈতিকভাবে দমিয়ে রাখতে মোশাররফ এই নাটক করিয়েছে। হয়রানি করার জন্য আমরা দায়ীদের শাস্তি চাই।”
তাদের এই অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কারও সঙ্গে আমার খারাপ সম্পর্ক নেই। এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে আমি সব সময়ই সচেষ্ট। কেন তারা আমাকে জড়িয়ে কথা বলছে আমি বুঝতে পারছি না।”