সোমবার ঢাকায় বিজিবি সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম একথা জানান।
তিনি বলেন, “আমাদের তখন নির্বাচনের দায়িত্বও পালন করতে হবে, সীমান্ত রক্ষাও করতে হবে। আমাদের তো তখন জনবল ভাগ হয়ে যাবে, তখনই তো তাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। সীমান্তে কম্পারেটিভলি লোক কম থাকবে সে সময়।
“সেই সময় যেন আমাদের সীমান্ত সুরক্ষিত থাকে, সে জন্য আমরা ভারত এবং মিয়ানমার দুই বাহিনীর কাছে সহযোগিতা কামনা করেছি। যেন ওই সময় আমাদের আন্তঃরাষ্ট্রীয় সীমান্ত নিরাপদ সুরক্ষিত এবং শান্ত থাকে।”
আগামী ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। সংসদসহ সব নির্বাচনে নিরাপত্তার জন্য বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে সীমান্তে অবৈধ অস্ত্র চোরাচালন ও অপরাধমূলক তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে বিজিবির প্রস্তুতি সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে চান।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে তারা তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করতে প্রস্তুত।
“ওই সময়ে আমাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণগুলো বন্ধ থাকবে, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ ছুটিতে থাকবে না। নিয়মিত কাজের মাত্রা কমিয়ে আনা হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমাদের বেশি জনবল যাতে কাজ করতে পারে সে জন্য এগুলো করা হবে।”
নির্বাচনের সময় সরকারে আদেশ অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানান জেনারেল সাফিনুল।
মাদক চোরাচালানিদের কৌশল বদলানোর বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “মাদকের চাহিদা থাকলে আসবেই। এজন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা। চাহিদা কমে আসলে সরবরাহ কমে যাবে।”
যে সব সীমান্ত এলাকা দিয়ে অস্ত্র চোরাচালান হয়, সে সব এলাকায় বিজিবি তার জনবল বাড়িয়েছে বলে জানান তিনি।
নয়া দিল্লিতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দুই বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের সম্মেলনে সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গে জেনারেল সাফিনুল বলেন, “এটা শূন্যের কোঠায় নেওয়ার জন্য বিজিবির চেষ্টা অব্যাহত আছে এবং সফলতাও পাওয়া গেছে।”
তিনি জানান, ২০০১ সালে যেখানে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর গুলিতে ৭১ জন নিহত হয়েছিলেন, ২০১০ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৬০ জনে। ২০১৬ সালে তা ৩১ জনে নেমে এসেছে। চলতি বছর আট মাসে মারা গেছে মাত্র একজন।
সীমান্তে এখন আর অরক্ষিত অঞ্চল নেই জানিয়ে বিজিবি প্রধান বলেন, তবে কিছু জায়গায় বিজিবি সদস্যদের দীর্ঘ পথ হেঁটে দায়িত্ব পালন করে থাকে। সেসব জায়গায় রাস্তা না থাকার কারণে অনেক কষ্ট হয়।
এই দুর্ভোগ লাঘবে সরকার রাস্তা তৈরির কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “রাস্তা বানাতে যে সব ভারী যন্ত্রপাতি লাগে, তা যেন তাদের (ভারতীয়) রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সে ব্যাপারে এবারের সম্মেলনে অনুরোধ করা হলে তারা সম্মতি দিয়েছে।”
“এই সম্মেলন অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাদের আন্তরিকতা যথেষ্ট ছিল, আমরা সম্মেলনে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথা বলেছি, তারা সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে,” বলেন বিজিবি প্রধান।