মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক উন্মুক্ত ব্রিফিংয়ে তিনি আহ্বান জানান।
অস্কারজয়ী এই অভিনেত্রী বলেন, “ব্যাপক মানবিক সংকটে কী অবদান রাখতে পারি তা দেখতে গত মার্চে ইউএনএইচসিআরের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে আমি বাংলাদেশে গিয়েছিলাম।
“কিন্তু সেখানে ভোগান্তির যে বিস্তার ও গভীরতা আমি দেখেছি তার জন্য কোনোভাবেই আমি প্রস্তুত ছিলাম না।”
রাখাইনে অভিযানকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবে মিয়ানমার তুলে ধরতে চাইলেও জাতিসংঘ একে জাতিগত নিধনযজ্ঞ হিসেবেই দেখছে।
ওই ঘটনার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে নিরাপত্তা পরিষদের অগাস্ট মাসের প্রেসিডেন্ট যুক্তরাজ্য এই আলোচনার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্যের কমনওয়েলথ্ ও জাতিসংঘ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী লর্ড তারিক মাহমুদ আহমাদ সভাপতিত্ব করেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ ও ইউএনডিপির অ্যাসোসিয়েট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর তেগেগনিঅর্ক গেট্টু এবং নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি সদস্য রাষ্ট্র ছাড়াও বাংলাদেশ ও মিয়ানমার এই সভায় বক্তব্য দেন।
কেইট ব্লানচেট তার সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, “শরণার্থীরা মিয়ানমারকেই তাদের ঘর হিসেবে বিবেচনা করে। কিন্তু ফেরার বিষয়ে তাদের মনের মধ্যে বাস্তব ও গভীর ভীতি কাজ করছে।”
বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাক রোহিঙ্গাদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে সবার প্রতি আহ্বান ব্লানচেট।
তিনি বলেন, “সেখানে সংক্ষিপ্ত কোনো রাস্তা নেই, কোনো বিকল্প নেই। আমরা আগেও রোহিঙ্গাদের রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছি। প্লিজ, আমরা যেন আবারও তাদের হারাই।
সভায় জাতিসংঘ মহাসচিব গত জুলাই মাসে তার কক্সবাজার সফরের সময় বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মর্মস্পর্শী বর্ণনা উপস্থাপন করেন।
গুতেরেজ বলেন, “ইতিমধ্যে এক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এই সমস্যা অনির্দিষ্টকাল ধরে চলতে পারে না। নিরাপত্তা পরিষদ প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেটমেন্ট গ্রহণে একতা দেখিয়েছিল। এই একতা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন যদি আমরা যথাযথ কাজের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের দাবী পূরণ করতে চাই।”
কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালার পূর্ণ বাস্তবায়নের কথা পুনরুল্লেখ করে জাতিসংঘ এবং এর বিভিন্ন সংস্থাসমূহকে রাখাইন প্রদেশে বাধাহীন প্রবেশাধিকার দিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব।