প্রধানমন্ত্রীকে নওশাবার ‘ধন্যবাদ’

ফেইসবুকে গুজব ছড়ানোর মামলায় রিমান্ড শেষে জামিনে মুক্তি পাওয়া অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেইসবুকেই ধন্যবাদ জানিয়েছেন ‘মেয়ের সঙ্গে ঈদ করার সুযোগ’ করে দেওয়ার জন্য।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 August 2018, 01:11 PM
Updated : 23 August 2018, 01:14 PM

সেইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কারা কর্তৃপক্ষ ও হাসপাতালের সবাইকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রতিটি স্তরে ‘সহমর্মিতার সঙ্গে হেফাজত’ করেছেন বলে।

ঈদের পরদিন বৃহস্পতিবার নওশাবার স্বামী এহসান রহমান জিয়ার ফেইসবুক ওয়ালে ধন্যবাদ জানিয়ে ওই বার্তা আসে।

`ঢাকা অ্যাটাক’, ‘ভুবন মাঝি’সহ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করা নওশাবার ওই বার্তায় বলা হয়, “আমার একমাত্র কন্যা প্রকৃতির সাথে ঈদের আনন্দ পরিপূর্ণভাবে অনুভব করার সুযোগ করে দেয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানোর উপযুক্ত ভাষা আমার জানা নেই।

“তিনি বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষের একজন পরীক্ষিত, প্রকৃত ও সুযোগ্য অভিভাবক, এই ভূমিকার বাইরেও তিনি যে একজন মমতাময়ী মা, তা আবারো আমি নিজে একজন মা হিসেবে হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে বুঝতে পারলাম।”

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় গত ৪ অগাস্ট গ্রেপ্তার হন অভিনেত্রী নওশাবা।

ওইদিন আন্দোলনের মধ্যে ঢাকার জিগাতলায় সংঘর্ষ বাঁধলে ফেইসবুকে লাইভে এসে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু এবং একজনের চোখ তুলে ফেলার ‘খবর’ দেন নওশাবা, যা পরে গুজব প্রমাণিত হয়।

র‌্যাব ওই দিনই নওশাবাকে আটক করে তার বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করে। ওই মামলায় দুই দফায় মোট ৬ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাকে। এর মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসাও দেওয়া হয়।

পুলিশের ভাষ্য, নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে ‘আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোই’ নওশাবার উদ্দেশ্য ছিল এবং তা তিনি জিজ্ঞাসাবাদে ‘স্বীকার করেছেন’।

একবার জামিন আবেদন নাকচের পর কোরবানি ঈদের আগের দিন মঙ্গলবার আবারও আবেদন করা হলে নওশাবার জামিন মঞ্জুর করে ঢাকার একটি আদালত। সেদিন সন্ধ্যায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। 

জিয়ার ফেইসবুক ওয়ালে নওশাবার পক্ষে দেওয়া বার্তায় পুলিশ, র‍্যাব, গোয়েন্দা পুলিশ, সাইবার ক্রাইম ইউনিট আর কাশিমপুর কারাগারে দায়িত্বরত আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিটি সদস্য, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক এবং নার্সদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।

বলা হয়, “যারাই আমাকে অনেক প্রফেশনালিজম আর সহমর্মিতার সঙ্গে প্রতিটি স্তরে হেফাজত করেছিলেন, তাদের প্রতিও আমার আকুণ্ঠ কৃতজ্ঞতা।”

পরিবারের পাশে থেকে ‘ক্রমাগত সাহস আর আশ্বাস’ দেওয়ার জন্য অভিনয় শিল্পী সমিতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ও অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গণমাধ্যমকর্মী, বাংলাদেশের সকল শিশু আর শুভাকাঙ্ক্ষীদেরও ধন্যবাদ জানানো হয়েছে ওই বার্তায়। 

সেখানে বলা হয়, ঈদের আগের দিন জামিন দেওয়ায় মাধ্যমে দেশের স্বাধীন বিচার বিভাগ তার ‘মানবিকতার উজ্জ্বল এক দৃষ্টান্ত স্থাপন’ করা হয়েছে।

নওশাবার বার্তা শেষ হয়েছে এভাবে- “আমি আবারো একান্ত অনুরোধ করে বলতে চাই, যেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার চিরায়ত মাতৃত্বসুলভ মমতায় আমার আবেগতাড়িত ও অনিচ্ছাকৃত ভুলকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেন।"