মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান জ্যেষ্ঠ জেল সুপার ইকবাল কবির চৌধুরী।
মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান ও ফারুক হাসান।
রাশেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থী। আর ফারুক পড়েন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্বে।
তাদের সঙ্গে জামিন পাওয়া অন্যরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মশিউর রহমান, দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র সাইদুর রহমান, ইসলামিক স্টাডিজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আতিকুর রহমান ও আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের তারিকুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি শেষ বর্ষের এপিএম সুহেল, গাজীপুর ভাউয়াল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র শাখাওয়াত হোসেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ শেষ বর্ষের ছাত্র জসিমউদ্দিন আকাশ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ শেষ বর্ষের ছাত্র মাসুদ সরদার।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ব্যানারে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করে আসছে একদল শিক্ষার্থী।
তাদের আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ‘ঘোষণা’ দিলেও সরকারি প্রজ্ঞাপন না আসা পর্যন্ত নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিল ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
গত ৮ এপ্রিল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় পুলিশ ও ছাত্রলীগের।
রাতভর ওই সংঘর্ষের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালিয়ে প্রায় সব কিছু ভাঙচুর করা হয়। এসব ঘটনায় পাঁচটি মামলা করা হয়। তারপর ফেইসবুকে উসকানির অভিযোগ আনা হয় ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাদের বিরুদ্ধে।
ফারুককে আটক করার পর গত ৯ এপ্রিল শাহবাগ থানায় পুলিশের দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই মামলায় বেআইনি সমাবেশ, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ফারুকের সঙ্গে তরিকুল ইসলাম ও জসীম নামে আরও দুজনকে শাহবাগ থানার ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
রাশেদ খানকে তথ্য-প্রযুক্তি আইনের মামলায় গত ১ জুলাই রাজধানীর ভাসানটেক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর গণজাগরণ মঞ্চের নেতা লাকী আক্তারের ঢাকার বাসায় অভিযান চালিয়ে ১১ জুলাই রাতে গ্রেপ্তার করা হয় এপিএম সুহেলকে।
রাশেদ, ফারুক ও সুহেলসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত ২০ শিক্ষার্থীকে সোমবার জামিন দেয় আদালত। তাদের মধ্যে দশজন ঈদের আগের দিন মুক্তি পেলেন।