ট্রেনে সূচি বিপর্যয়ে দুর্ভোগ নিয়েই শেষ দিনের ঈদযাত্রা

সূচিতে গড়বড়ের কারণে এবারের ঈদযাত্রার শুরু থেকে যে ভোগান্তি ট্রেনযাত্রীদের সঙ্গী হয়েছিল, কোরবানির ঈদের আগের দিনও তা কমেনি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 August 2018, 10:18 AM
Updated : 21 August 2018, 10:33 AM

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশন থেকে যেসব ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল, তার কোনোটি তিন ঘণ্টা, আবার কোনোটি পাঁচ ঘণ্টা দেড়িতে ছেড়ে গেছে। এই বিলম্বের কারণে যাত্রীদের প্ল্যাটফর্মে বসে থাকতে হয়েছে দীর্ঘ সময়।

এতে দুর্ভোগে পড়েছেন নারী-শিশু ও বৃদ্ধরা। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামলে ট্রেনে উঠতে গিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়েছে তাদের।

ঈদুল আজহার আগের দিনে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ৫৩টি ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া আরো পাঁচটি ‘বিশেষ ট্রেন’ যাবে বিভিন্ন গন্তব্যে।

ট্রেনগুলো দেরিতে স্টেশন ছেড়ে যাওয়ায় যাত্রীরা যেমন বিপাকে পড়েছেন, অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামাল দিতে রেল কর্তৃপক্ষকেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।

‘ঈদ স্পেশাল’ লালমনি এক্সপ্রেস লালমনিরহাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল সকাল সোয়া ৯টায়।

তিন ঘণ্টা দেরি করে বেলা ১২টার দিকে ট্রেনটি প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যাওয়ার পরপরই অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে একটি বগি বসে পড়ে।

পরে ট্রেনটি দ্রুত স্টেশনে ফিরিয়ে আনে কর্তৃপক্ষ। ছাদ থেকে যাত্রী নামিয়ে বেলা সোয়া ১টার দিকে আবার গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

ওই ট্রেনের ছাদ থেকে নেমে আসতে বাধ্য হওয়া যাত্রী আবু বকর বলেন, “আমার স্ট্যান্ডিং টিকেট কাটা ছিল। কিন্তু বগিতে জায়গা না পেয়ে আমি ছাদে উঠেছিলাম। পরে নামিয়ে দিলো। আমি জানি না এখন কীভাবে বাড়ি যাব।”

কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক সীতাংশু চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ট্রেনের ছাদে যাত্রী উঠতে মানা করছি আমরা। কিন্তু যাত্রীরা কোনো কথা শুনছে না। ওদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।”

ট্রেনের সূচি বিপর্যয়ের কারণ হিসেবেও যাত্রীর অতিরিক্ত চাপের কথাই বললেন ব্যবস্থাপক।

“বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রা বিরতিতে যাত্রী ওঠনামায় অনেক বেশি সময় লাগছে। ৫ মিনিটের জায়গায় ১৫-২০ মিনিটও ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকছে। তাছাড়া বেশি ভিড় হলে ট্রেন চলেও আস্তে। এজন্য গন্তব্যে যেতে বেশি সময় লাগছে।”

রাজশাহীর ট্রেন ধূমকেতু এক্সপ্রেস সকাল ৬টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও মঙ্গলবার ছেড়ে যায় বেলা সাড়ে ১১টায়। সকাল ৬টা ২০ মিনিটের সুন্দরবন এক্সপ্রেস খুলনার পথে রওনা হয় বেলা সাড়ে ১০টায়।

রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ৯টায় কমলাপুর ছাড়ার কথা থাকলেও বেলা সোয়া ১টা পর্যন্ত সেটি ঢাকায় পৌঁছেনি। চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ৮টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১টা পর্যন্ত যাত্রীরা স্টেশনে বসে ছিলেন ট্রেনের অপেক্ষায়।

বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রহিমা আক্তার তার স্বামী ও শাশুড়িকে নিয়ে যাবেন রংপুরে।

রেলের সূচি বিপর্যয়ে বিরক্ত হয়ে তিনি বলেন, “আম্মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার শরীর ভালো না। স্টেশনের অবস্থা এমন হবে জানলে যেতামই না বাড়িতে।”

রংপুরগামী যাত্রী ফাহাদ বিন আলম বলেন, “তের দিন আগে টিকিট কেটে রেখেছিলাম। আজকে সত্যি বিরক্ত হয়ে গেলাম।”