রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অনুরোধ জানান।
হাসিনুরকে কারা তুলে নিয়ে যেতে পারেন, এমন প্রশ্নের জবাবে শামীমা আখতার বলেন, “এই বিষয়ে আমাদের কোনো ধারণা নেই, ধারণা করে কোনো কিছু বলতে চাই না। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুকম্পা কামনা করছি, আমার স্বামীকে খুঁজে বের করে দেওয়ার জন্য তিনি যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন।”
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, সাদা পোশাক পরা ১৪/১৫ জন লোক দুটি মাইক্রোবাসে করে এসে হাসিনুরকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।
শামীমার দাবি, তার স্বামী সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর নির্দোষ এবং তিনি কোনো অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত নন।
গত ৮ অগাস্ট রাত ১০টার দিকে ঢাকার মিরপুর ডিওএইচএসের বাসার পাশ থেকে হাসিনুর রহমানকে তুলে নেওয়ার হয় বলে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
হাসিনুর সেনাবাহিনীতে চাকরির সময় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় দণ্ডিত হয়ে পাঁচ বছর কারাদণ্ড ভোগ করে ২০১৪ সালে মুক্তি পান। র্যাব-৫ ও র্যাব-৭ এর সাবেক অধিনায়ক বিজিবিতেও ছিলেন কিছুকাল।
স্বামীকে তুলে নেওয়ার ঘটনার বিবরণ দিয়ে শামীমা বলেন, সেদিন জাহিদ নামে অবসরপ্রাপ্ত আরেক সেনা কর্মকর্তার ডাকে ১০ নাম্বার রোডে নিজেদের বাসা থেকে হাসিনুর নিচে নেমে যান। জাহিদ ওই সময় তার সঙ্গে আরেকজন বন্ধু রয়েছে বলে জানালেও তার নাম জানাননি।
“১১ নাম্বার রোড থেকে হাসিনুরকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে সেখানকার একটি বাসার কেয়ারটেকার ফোনে আমার বোনের হাজব্যান্ডকে জানায়।”
মোকতার নামে ওই কেয়ারটেকার ঘটনাটি দেখে ফেলে এবং মোবাইল ফোনে ঘটনার ছবি তুলেন। তাকে আরেকটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার আধাঘণ্টা পর মাটিকাটা ইসিবি চত্বরে নামিয়ে দেওয়া হয়। ফোন দিয়ে ছবি তোলায় তা অপহরণকারীরা রেখে দেয় বলে জানান শামীমা।
“হাসিনুরকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর জাহিদের সাথে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি।”
এ বিষয়ে পল্লবী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হলেও পুলিশ কোনো অগ্রগতি জানাতে পারেনি বলে জানান তিনি।
“জিডির পর বাসায় পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অন্য কোনো সদস্য যায়নি, তবে থানার তদন্ত কর্মকর্তার সাথে ফোনে একাধিকার কথা হয়েছে।”
এছাড়া হাসিনুর রহমানের সন্ধানে পরিবারের পক্ষ থেকে থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইজিপি ও সেনা প্রধানের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে বলে জানান শামীমা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শামীমা বলেন, “তার (হাসিনুর) সাথে কারো কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না। গত ৪/৫ বছর ধরে তিনি বাসায় আছেন।
“শেয়ার বিজনেস করতেন। বাসায় থেকে বাচ্চাদের স্কুলে আনা-নেওয়া করতেন। কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথেও তিনি জড়িত ছিলেন না।”
সংবাদ সম্মেলনে হাসিনুর রহমানের শ্যালক ওয়াকিল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।