উত্তরের বাসে ‘স্বস্তির’ ঈদযাত্রা

ঈদযাত্রার প্রথম দিন ঘরমুখো মানুষের ভিড় বেড়েছে ঢাকার বাস কাউন্টারগুলোতে।

আতিক ফয়সালবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 August 2018, 05:27 AM
Updated : 17 August 2018, 07:19 AM

শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনের সকালে গাবতলী, কল্যাণপুর ও শ্যামলীতে গিয়ে দেখা যায়, রাজশাহী, নওগাঁ, চাপাইনবাবগঞ্জসহ উত্তরবঙ্গের বাসগুলো যথা সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে। তবে বড় ধরনের সূচি বিপর্যয়ে পড়েছে কুষ্টিয়া, মেহেরপুরগামী বাস।

ঈদের সরকারি ছুটি শুরু হতে আরও তিন দিন বাকি। তবে ঈদযাত্রার ঝক্কি এড়াতে অনেকেই পরিবারের সদস্যদের আগেভাগে বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছেন।   

শুক্রবার যারা ঢাকা ছাড়ছেন, তাদের অধিকাংশই আগাম টিকেটের যাত্রী। তবে অনেকে সকালে টার্মিনালে এসেও বেশি দামে টিকেট পেয়েছেন।

বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানি ঈদের এই মওসুমে প্রতি টিকেটে অন্য সময়ের চেয়ে এক থেকে দুইশ টাকা বেশি নিলেও তা নিয়ে খুব বেশি অভিযোগ নেই যাত্রীদের।

তবে আগাম টিকেট কেটে  দীর্ঘ সময় অপেক্ষার ভোগান্তিতে পড়া যাত্রীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।

মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, গাবতলী, কল্যাণপুর, শ্যামলী এলাকা থেকে ঈদের সময় দুই শতাধিক পরিবহনের প্রায় আড়াই হাজার বাস দেশের উত্তর ও দক্ষিণ জনপদের বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

বিভিন্ন বাস কাউন্টারের কর্মীরা জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়ক, বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে উত্তর বঙ্গের পথে কোথাও যানজটের খবর আসেনি সকাল থেকে। ফলে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বাস নির্ধারিত সময়েই ছেড়ে যাচ্ছে।

তবে পদ্মায় নাব্য সংকটের কারণে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া ফেরি চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় দক্ষিণের বিভিন্ন গন্তব্যের বাসের যাত্রা বিলম্বিত হচ্ছে। 

কুষ্টিয়াগামী জেআর পরিবহনের যাত্রী বুলবুল হোসেন বলেন, অন্য সময় টিকেটের দাম ৪৫০ টাকা হলেও তিন দিন আগে ৫৫০ টাকা দিয়ে তিনি টিকেট কিনেছেন। তাতেও তার অভিযোগ নেই; গাড়ি সময়মত ছেড়ে যাচ্ছে, এতেই তিনি খুশি।

বুলবুলের সঙ্গে কথা বলার সময় তার বাসটি ঠিক সময়ে যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে মেহেরপুরগামী মুজিবনগর ডিলাক্সের সব গাড়িই নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অন্তত ১২ ঘণ্টা দেরি করছে বলে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা অভিযোগ করলেন।

নজরুল ইসলাম নামের এক যাত্রী টিকেট দেখিয়ে বলেন, ১৬ তারিখ রাত ৯টায় তার বাস ছাড়ার কথা। শুক্রবার সকাল ৯টার সময়ও গাড়ির দেখা মেলেনি। গাড়ি কখন আসবে তাও বলতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।

কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করলেন, গাড়ি কম থাকার পরও লাভের আশায় বেশি টিকেট বিক্রি করেছে মুজিবনগর ডিলাক্স। কিন্তু এখন সময়মত গাড়ি দিতে পারছে না।

তবে এই পরিবহনের একজন কাউন্টার কর্মী বললেন, ফেরি পারাপারে সময় বেশি লাগছে, ঘাটেও জট আছে। সে কারণে এই সূচি বিপর্যয়।

ঈদের সময় বেশি ভাড়া নেওয়ার কথা স্বীকার করে কুষ্টিয়াগামী জেআর পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার লিটন বলেন, প্রতিদিন তাদের পাঁচটা গাড়ি চলছে। ঢাকায় ফিরতি পথে যাত্রী পাওয়া যায় না বলে ‘একটু বেশি’ দাম রাখছেন।

টিকেট আগাম বিক্রি হয়ে গেলেও হাতে গোণা কিছু যাত্রী পেয়ে যাচ্ছেন তাৎক্ষণিক টিকেট। কোনো কারণে কেউ টিকেট ফেরত দিলে সেই টিকেট কিছুটা চড়া দামে বিক্রি করছেন কাউন্টার কর্মীরা।

রাজশাহীগামী গ্রামীণ পরিবহনের কাউন্টার ব্যবস্থাপক শামীম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের সব টিকেট আগাম বিক্রি হয়ে গেছে।

“দুই চারজন যারা তাৎক্ষণিক টিকেট পাচ্ছেন, সেটা তাদের ভাগ্য। এমনকি ঈদের পর ঢাকায় ফেরার টিকেটও বিক্রি হয়ে গেছে।”