চার দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের পর বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে তোলা হয়েছিল নিউ ভিশন পরিবহনের বাসচালক মানিক মিয়া ও সহকারী ইব্রাহীম খলিল ইমনকে।
এরপর হাকিম রায়হানুল ইসলাম বাসচালক ও সহকারীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে সংশ্লিষ্ট আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই ইউসুফ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
গত ১০ অগাস্ট রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল শেরেবাংলা নগরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে একজন রোগী দেখে বের হওয়ার সময় পেছন থেকে তার গাড়িতে ধাক্কা দেয় মিরপুর-মতিঝিল রুটের নিউ ভিশন পরিবহনের একটি বাস। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গাড়িতে থাকলেও তার কোনো ক্ষতি হয়নি।
পুলিশ এর পরপরই ওই বাসটির চালক ও হেলপারকে আটক করে, তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়। পুলিশ কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, তখন বাসটি চালাচ্ছিলেন হেলপার, যার ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার এসআই মো. রুহুল আমিন গত ১১ অগাস্ট আসামি মানিক ও ইমনকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডে চান। বিচারক চার দিন রিমান্ডের আদেশ দেন।
তখন রাষ্ট্রপক্ষে পুলিশ কর্মকর্তা আদালতে বলেছিলেন, “এরা কী রকম ভয়ঙ্কর যে কড়া পাহারা এড়িয়ে এরা দেশের শীর্ষ পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির গাড়িকে আঘাত করে। এটি হত্যা চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে। মামলার এজাহারে দণ্ডবিধির ২৭৯ ধারার সঙ্গে ৩০৭ ধারাও যুক্ত করা রয়েছে।”
রিমান্ড ফেরতের আবেদনে বলা হয়, “জিজ্ঞাসাবাদকালে আসামিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
“আসামিদের নাম-ঠিকানা যাচাই হয়নি। তারা জামিনে মুক্তি পেলে পলাতক হবে এবং মামলার তদন্তে বিঘ্ন সৃষ্টি হবে।”
এজন্য তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
অন্যদিকে আসামিদের জামিন চেয়ে তাদের আইনজীবী ইকবাল হোসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
তিনি বলেন, “এত পুলিশ প্রটেকশনে কীভাবে আসামিদের গাড়ি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের গাড়িকে ধাক্কা দেবে?”
শুনানি শেষে বিচারক তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে সায় দিয়ে দুই আসামির জামিন আবেদন নাকচ করেন।