জেসমিন ইসলামের স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন (মেডিকেল রিপোর্ট) দেখে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি ড. কে এম হাফিজুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ জামিন প্রশ্নে রুল নিষ্পত্তি করে মঙ্গলবার এ রায় দেয়।
আদালতে জেসমিন ইসলামের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল মতিন খসরু। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রোনা নাহরীন ও এ কে এ আমিন উদ্দিন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, “জেসমিন ইসলাম জামিন পাননি। তবে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে পদক্ষেপ নিতে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।”
আমিন উদ্দিন বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ১৭ জুলাই জামিন নিয়ে রুল শুনানির সময় জেসমিন ইসলামের আইনজীবী তার মক্কেলের অসুস্থতার কথা জানিয়েছিলেন। তখন আদালত কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষের কাছে দুই সপ্তাহের মধ্যে তার মেডিকেল রিপোর্ট চায়।
কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ গত ২ অগাস্ট জেসমিন ইসলামের চিকিৎসা প্রতিবেদন আদালত জমা দেয়। তাতে বলা হয়েছে, জেসমিন ইসলামের উচ্চ রক্তচাপ, গাইনি, হৃদরোগ সংক্রান্ত ও মানসিক রোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত। তাকে গাজীপুরের তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
২০১৬ সালের ১ নভেম্বর জেসমিনসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর মতিঝিল থানায় এই মামলা করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক জয়নাল আবেদিন। ওই দিন বিকালেই তাকে দুদকের একটি দল রাজধানীর বংশাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, হল-মার্কের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাদের প্রতিষ্ঠানের বেতনভুক্ত কর্মচারী মো. জাহাঙ্গীর আলমকে আনোয়ারা স্পিনিং মিলসের মালিক এবং মীর জাকারিয়াকে ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক সাজিয়ে জনতা ব্যাংকের জনতা ভবন করপোরেট শাখায় একটি হিসাব খোলেন।
প্রতিষ্ঠান দুটির মাধ্যমে ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির কোনো মালামাল আমদানি-রপ্তানি না হওয়া সত্ত্বেও আমদানি-রপ্তানির ভুয়া রেকর্ডপত্র তৈরি করে সোনালী ব্যাংক থেকে ৮৫ কোটি ৮৭ লাখ ৩৩ হাজার ৬১৬ টাকা তুলে আত্মসাতের অভিযোগ করা হয় মামলায়।
এ মামলায় গত বছরের ১৭ অগাস্ট বিচারিক আদালতে জেসমিনের জামিন নামঞ্জুর হলে তিনি হাই কোর্টে আবেদন করেন।
আবেদনের শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট পরে গত বছরের ৫ নভেম্বর তার জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন। সে রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত আজ রায় দিল।
জেসমিনের স্বামী তানভীর মাহমুদ হল-মার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনিও কারাগারে রয়েছেন।
সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল না করায় দুদকের করা মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত গত ১১ জুলাই জেসমিন ইসলামকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে।