দ্বিমত হতে পারে, মতবিরোধ নয়: মাহবুব তালুকদার

পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনে নিজেদের মধ্যে ভিন্নমত থাকলেও মতবিরোধ নেই বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 August 2018, 02:49 PM
Updated : 13 August 2018, 02:55 PM

সম্প্রতি সিইসি কে এম নূরুল হুদার এক কথার সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করে তা নিয়ে নানা আলোচনার প্রেক্ষাপটে সোমবার সাংবাদিকদের একথা বললেন এই নির্বাচন কমিশনার।

‘বড় নির্বাচনে অনিয়ম হবে না- এমন নিশ্চয়তা দেওয়ার আমার সুযোগ নেই’- সিইসির গত বুধবার দেওয়া এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে মাহবুব তালুকদার বলেছিলেন, এটা কমিশনের বক্তব্য নয়। এ ধরনের কথায় অনিয়মকারীরা উৎসাহিত হতে পারে।

সিইসির ওই মন্তব্যের পর তাকে ‘সংযত’ হওয়ার পরামর্শ দেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বলেন, এরপর আর পদে থাকার অধিকার নেই নূরুল হুদার।

একাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পথে এগিয়ে চলার ইসির অন্যতম সদস্য মাহবুব তালুকদার বলেন, “নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে নানা প্রকার দ্বিধাদ্বন্দ্বের সংবাদ গণমাধমে প্রকাশ হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন রকম ছবক দিচ্ছে কমিশনকে। পত্রপত্রিকায় এমন সংবাদও বেরিয়ে যে, সিইসি ও আমার মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।

“কিন্তু আমাদের মধ্যে কোনো রকম মতবিরোধ আছে বলে আমি মনে করি না। কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে আমাদের দ্বিমত হতেই পারে। কিন্তু তা মতবিরোধ হিসাবে গণ্য করা ঠিক হবে না।”

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার (ফাইল ছবি)

সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে কমিশনের অবস্থানও তুলে ধরেন সাবেক আমলা মাহবুব তালুকদার।

তিনি বলেন, “পাঁচ নির্বাচন কমিশনার মিলে একক সত্ত্বা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

“আমরা সকল কমিশনার দেশবাসীকে একটি ভালো নির্বাচন উপহার বদ্ধপরিকর। সাংবিধানিকভাবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সচেতন রয়েছি।”

দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ এখনও অনিশ্চিত। বিভিন্ন শর্তের সঙ্গে তারা বর্তমান ইসির প্রতি অনাস্থার কথা জানিয়েছে।

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার দেড় বছর পার করতে যাচ্ছে বর্তমান ইসি। গত বছর ইসি গঠনের সময় যার নাম বিএনপি থেকে প্রস্তাব এসেছিল বলে তখন জানানো হয়েছিল।

এরই মধ্যে সর্বশেষ সিটি নির্বাচনের আচরণবিধি সংশোধন নিয়ে অন্যদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছিলেন মাহবুব তালুকদার।

এর আগে ইসি কর্মকর্তাদের বদলি নিয়েও আন-অফিসিয়াল (ইউও নোট) দেন তিনি। সেনা মোতায়েন ও গাজীপুরের ভোটে অনিয়ম নিয়েও নিজের মতামত দিয়ে আলোচনায় ছিলেন এ নির্বাচন কমিশনার।

অবশ্য দশম সংসদ নির্বাচনের আগে রকিবউদ্দিন আহমদ নেতৃত্বাধীন কমিশনে নিজেদের মধ্যে জ্যেষ্ঠতা নিয়ে বিরোধ এবং অষ্টম সংসদ নির্বাচনের আগে এটিএম শামসুল হুদার কমিশনেও সচিবালয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের ঘটনা প্রকাশ পেয়েছিল।