সোমবার ও মঙ্গলবার তাদেরকে দুদক প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত থাকতে নোটিস দেওয়া হয়েছে বলে রোববার দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।
সোমবার কয়লা খনির সাবেক জিএম (মাইনিং) মীর আব্দুল মতিন ও জিএম (সারফেস অপারেশন) মো. সাইফুল ইসলাম এবং সাবেক এমডি মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও মো. মাহবুবুর রহমানকে তলব করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুদকে যেতে বলা হয়েছে কোম্পানিটির সাবেক এমডি খুরশিদুল হাসান, কামরুজ্জামান, মো. আমিনুজ্জামান ও সাবেক জিএম (মাইনিং) মো. মিজানুর রহমানকে।
কয়লা দুর্নীতির ঘটনায় এর আগে গত ২৪ জুলাই দিনাজপুরের পার্বতীপুর মডেল থানায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন কোম্পানিটির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান। মামলাটির তদন্ত করছেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলম।
প্রনব কুমার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই মামলার তদন্তের স্বার্থে সাবেক আট কর্মকর্তার বক্তব্য গ্রহণের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা তাদের তলব করেছেন।”
তবে এই আটজনের কেউ এই মামলার আসামি নন বলে জানান প্রনব।
কয়লা উধাও হওয়ার ঘটনা প্রকাশের পর ব্যাপক আলোচনার মধ্যে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছিলেন, “এটা তো একদিনে হয়নি। এটা বহুদিনের ব্যাপার। অনেকে বলছেন, ২০০৫ সাল থেকে।”
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ মেট্রিক টন কয়লা খোলা বাজারে বিক্রি করে ২৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা।
এজাহারে বলা হয়, খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমেদ, কোম্পানি সচিব ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানিয়া, মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নূর-উজ-জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর) একেএম খালেদুল ইসলামসহ খনির ব্যবস্থাপনায় জড়িত অপর আসামিরা ওই কয়লা চুরির ঘটনায় জড়িত।
অন্য যাদের আসামি করা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই ব্যবস্থাপক, উপ-ব্যবস্থাপক ও সহকারী ব্যবস্থাপক পর্যায়ের কর্মকর্তা।
দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর নূর-উজ-জামান ও খালেদকে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পেট্রোবাংলা। হাবিব উদ্দিনকে সরিয়ে আনা হয়েছে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের দপ্তরে। কাশেম প্রধানিয়াকে সিরাজগঞ্জে বদলি করা হয়েছে।
কয়লা দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধানে নামার পর দুদক ১৯ আসামিসহ ২১ কর্মকর্তার বিদেশযাত্রা ঠেকাতে ইমিগ্রেশন বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে।
বড় পুকরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির কয়লা দিয়ে চলে পাশে অবস্থিত ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লা খনির ইয়ার্ডেই থাকত। কিন্তু হঠাৎ করে কয়লা সঙ্কট দেখা দেওয়ায় গত ২২ জুলাই থেকে বন্ধ হয়ে গেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন।
এর পরের দিন দুদক কর্মকর্তারা পরিদর্শনে গিয়ে খনির ইয়ার্ডে দুই হাজার টন কয়লা পান, যদিও কাগজে-কলমে সেখানে এক লাখ ৪৬ হাজার টন কয়লা মজুদ থাকার কথা।