২ মামলায় ২২ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রিমান্ডে

নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের মধ্যে পুলিশের উপর হামলা ও ভাংচুরের দুই মামলায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ ছাত্রকে জিজ্ঞসাবাদের জন্য দুদিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2018, 06:48 PM
Updated : 7 August 2018, 06:56 PM

এই শিক্ষার্থীরা বেসরকারি ইস্ট ওয়েস্ট, নর্থসাউথ, সাউথইস্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

সোমবারের সংঘর্ষের ঘটনায় বাড্ডা থানা পুলিশ এদের ১৪ জনকে এবং ভাটারা থানা পুলিশ আটজনকে বুধবার আদালতে হাজির করে প্রত্যেককে সাত দিনের জন্য হেফাজতে চেয়ে আবেদন করে।

ঢাকার মহানগর হাকিম আবদুল্লাহ আল মাসুদ দুদিন রিমান্ডের আদেশ দেন। শিক্ষার্থীদের পক্ষে জামিন চাওয়া হলেও সেই আবেদন নাকচ করেন তিনি।

বাড্ডা থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জুলহাস মিয়া রিমান্ড আবেদনে বলেন, সোমবার দুপুরে ইস্ট ওয়েস্টসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা আফতাব নগর মেইন গেটের রাস্তায় যান চলাচলে বাধা দেয়, লাঠিসোঁটা, ইট দিয়ে রাস্তার গাড়ি ভাংচুর করে। পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে আসামিরা।

এ ঘটনার ইন্ধনদাতা এবং অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য ১৪ আসামিকে গ্রেপ্তারের আবেদন জানান তিনি।

ভাটারা থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হাসান মাসুদ রিমান্ড আবেদনে বলেন, আসামিরা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার অ্যাপোলো হাসপাতাল ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় লোহার রড, লোহার পাইপ ও ইট দিয়ে পুলিশের উপর হামলা করে। ঘটনাস্থলের আশপাশের দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসার দরজা, জানালা ভাংচুর করে।

“পলাতক আসামিরা জঙ্গি গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন,” বলেন তিনি।

২২ শিক্ষার্থীর অনেককে আদালতে হাজির করা হয় রশি দিয়ে বেঁধে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী এ কে এম মুহিউদ্দিন ফারুক বলেন, “পুলিশ নিরপরাধ ছাত্রছাত্রীদের ধরে নিয়ে ভয়াবহ নির্যাতন চালিয়েছে।”

ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিদওয়ান আহমেদের আইনজীবী কবির হোসেন আদালতকে বলেন, “পুলিশ ধরে নিয়ে থানায় ফেলে মেরে তার হাতের একটি আঙুল ভেঙে দিয়েছে। তৃতীয় পক্ষের যারা ষড়যন্ত্র করেছে, তাদের পুলিশ গ্রেপ্তার না করে নিরীহ ছাত্রদের ধরে এনেছে।”

ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেপ্তার ছাত্রদের আগামী ৯ আগস্ট পরীক্ষা থাকার কথাও বলেন তাদের আইনজীবীরা।

গ্রেপ্তার মাসাদ মরতুজা বিন আহাদ, ফয়েজ আহম্মেদ আদনান এবং আজিজুল হাকিমের আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, পুলিশ থানায় ফেলে এই ছাত্রদের বেধড়ক পিটিয়েছে।

এই তিনজনের বিষয়ে পুলিশ আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে দাবি করছে, গ্রেপ্তার করার সময় ধস্তাধস্তির কারণে তারা ‘সামান্য আহত’ হন।

বাড্ডার মামলায় গ্রেপ্তার ১৪ ছাত্র হলেন রিসালাতুল ফেরদৌস, রেদোয়ান আহমেদ, রাশেদুল ইসলাম, বায়েজিদ, মুশফিকুর রহমান, ইফতেখার আহম্মেদ, রেজা রিফাত আখলাক, এএইচএম খালিদ রেজা, তারিকুল ইসলাম, নূর মোহাম্মাদ, সীমান্ত সরকার, ইকতিদার হোসেন, জাহিদুল হক ও হাসান। আর ভাটারা থানার মামলায় গ্রেপ্তার ছাত্ররা হলেন, আজিজুল করিম, মাসাদ মরতুজা বিন আহাদ, ফয়েজ আহম্মেদ আদনান, সাবের আহম্মেদ, মেহেদী হাসান, শিহাব শাহরিয়ার, সাখাওয়াত হোসেন ও আমিনুল এহসান।