অর্থাৎ, কোনো হজ এজেন্সির নিবন্ধিত হজযাত্রীরা সৌদি আরবে যেতে না পারলে তাদের বদলে অন্য কোনো নিবন্ধিত ব্যক্তিকে হজে পাঠানো যাবে; আর প্রতিস্থাপন করা যাবে তালিকার সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ হজযাত্রীর নাম।
হজ এজেন্সিজ অব বাংলাদেশ (হাব) এবং বাংলাদেশ হজযাত্রী কল্যাণ পরিষদের দাবি মেনে নিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার প্রতিস্থাপনের সীমা বাড়ানোর এই আদেশ জারি করে।
সেখানে বলা হয়, হজ এজেন্সিকে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ হজযাত্রী প্রতিস্থাপনের জন্য তার নিজস্ব প্যাডে হজ পরিচালকের কাছে ৩ অগাস্ট বিকাল ৫টার মধ্যে আবেদন করতে হবে। এই আবেদনটি অনলাইনেও নিশ্চিত করতে হবে।
“আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রতিস্থাপনযোগ্য হজযাত্রীর গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুজনিত কারণে হজ পালন করতে পারবেন না মর্মে উপযুক্ত চিকিৎসকের কাছ থেকে সনদ দাখিল করতে হবে।”
প্রতিস্থাপন প্রাপ্তির জন্য এজেন্সির পক্ষ থেকে কোনো মিথ্য তথ্য দেওয়া হচ্ছে না মর্মে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামাও আবেদনের সঙ্গে দাখিল করতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
“মিথ্যা তথ্য দিয়ে কোনো প্রতিস্থাপন করা হয়েছে কি না তা হজের পর যাচাই করা হবে। এ সময় মিথ্যা তথ্যে প্রতিস্থাপনের প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির লাইসেন্স বাতিলসহ বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মৃত্যু বা গুরুতর অসুস্থতার মত অনিবার্য কারণে কোনো নিবন্ধিত হজযাত্রী যেতে না পারলে তার বদলে অন্য কোনো নিবন্ধিত ব্যক্তিকে হজে পাঠানোর সুযোগ দেওয়া হয় এজেন্সিগুলোকে। সেজন্য চিকিৎসকের সনদ ও অঙ্গীকারনামাসহ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হয়।
প্রত্যেক এজেন্সি তাদের মোট হজযাত্রীর মধ্যে সর্বোচ্চ আট শতাংশকে ওই নিয়ম মেনে প্রতিস্থাপন করতে পারে। এবার ৮ শতাংশ প্রতিস্থাপানের সুযোগ দিয়ে ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু যাত্রী না পেয়ে বিমান কয়েকটি হজ ফ্লাইট বাতিল করার পর বাংলাদেশে হজ্জযাত্রী ও হাজী কল্যাণ পরিষদ হজযাত্রী প্রতিস্থাপনের সীমা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার দাবি জানায়।
সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এবার এক লাখ ২৬ হাজার ১৯৮ জন হজ করার সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে ৬ হাজার ১৯৮ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং ১ লাখ ২০ হাজার জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাবেন।
গতবছর ভিসা জটিলতায় যাত্রী না পেয়ে ২৪টি হজ ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল বিমান। তাতে ৪০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয় রাষ্ট্রায়ত্ত এই বিমান পরিবহন সংস্থা।
ওই জটিলতা এড়াতে সরকার এবার ভিসা হওয়ার আগেই সব এজেন্সিকে নিজ নিজ যাত্রীদের টিকিট বিমান সংগ্রহ করতে বলেছিল।
কিন্তু বেশ কিছু এজেন্সি এখনও তাদের হজযাত্রীদের জন্য সৌদি আরবে বাসা ভাড়া করতে না পারায় সেসব এজেন্সি টিকিট সংগ্রহ করেনি। ফলে বিমানের হজ ফ্লাইটের প্রায় আট হাজার টিকেট এখনও অবিক্রিত পড়ে আছে।
বাংলাদেশে হজ্জযাত্রী ও হাজী কল্যাণ পরিষদ বলছে, হজের জন্য প্রাক নিবন্ধন করা হয়েছে প্রায় দেড় বছর আগে। নিবন্ধিত হওয়ার পরও শারীরিক বা আর্থিক সমস্যা কিংবা অন্য কারণে অনেকে হজে যেতে পারছেন না। আবার সরকার হজযাত্রী প্রতিস্থাপনের সীমা বেঁধে দেওয়ায় সেই শূন্যস্থান পূরণ হচ্ছে না। টিকেট অবিক্রিত থাকার এটাও একটা কারণ।