বরিশালে অবৈধ প্রভাব বিস্তারে ৩ কেন্দ্র নিয়ে দুটি মামলা

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মাত্র তিনটি কেন্দ্রে ‘বেআইনি আচরণ’ ও ‘অবৈধ প্রভাব বিস্তারের’ কারণে মামলা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2018, 07:03 PM
Updated : 1 August 2018, 07:41 PM

ভোটের দুদিন পর বুধবার ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্মসচিব (চলতি দায়িত্ব) ফরহাদ আহাম্মদ খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবির বিবরণী অনুযায়ী তিনটি কেন্দ্রে অবৈধ প্রভাব বিস্তার ও বেআইনি আচরণ ঘটেছে। এটা নির্বাচনবিধি অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ বিবেচনায় তা অনুসন্ধান করে মামলা করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।”

আরও কেন্দ্র নিয়ে ইসির সিদ্ধান্ত পেলে পরবর্তীতে আবার নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

বরিশালের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইসির নির্দেশনা পেয়েই তিনটি কেন্দ্রের মধ্যে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে দুটির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দুটি থানায় অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করা হয়েছে। পুলিশ তদন্তের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।”

কেন্দ্র দুটি হচ্ছে-২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১১১ নম্বর কেন্দ্র নবজাগরণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের ১২০ নম্বর কেন্দ্র কাশিপুর গার্লস হাই স্কুল ও কলেজ।

বাকি কেন্দ্রটি ভোটের সময় অনিয়মের কারণে বন্ধ (১ নম্বর ওয়ার্ডের ৪ নম্বর কেন্দ্র সৈয়দ মজিদুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ) ঘোষণা করা হয় বলে জানান তিনি।

ভোটের সময় অনিয়মের কারণে প্রতিবেদন পাঠিয়ে ইসির কাছে সিদ্ধান্ত চান রিটার্নিং কর্মকর্তাও। পরবর্তীতে পর্যবেক্ষণ করে ১৫ কেন্দ্রের ফল স্থগিত করা হয়।

ভোটের পর সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বরিশাল সিটি নির্বাচন নিয়ে বলেছিলেন, বরিশালে কিছু কেন্দ্রে অনিয়ম সেখানে হয়েছে। এ সংখ্যা অন্য সিটির তুলনায় বড় ধরনের। এ সিটির ১২৩টি কেন্দ্রের মধ্যে অনিয়মের একটি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আরও ১৫টি কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে।

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে সাত প্রার্থীর মধ্যে বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগ এনে মাঝবেলায় ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন, ভোট স্থগিতের দাবি জানান আরও তিনজন। 

বরিশাল সিটির ভোটে ১২৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৬টি স্থগিত হওয়ায় মেয়র প্রার্থী কাউকে বিজয়ী ঘোষণা করেননি রিটার্নিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান।

তবে ১০৭ কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফলে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ারের চেয়ে ৮৭ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।

নৌকা প্রতীকে সাদিক পেয়েছেন ১ লাখ ৭ হাজার ৩৫৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সরওয়ার ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ১৩ হাজার ১৩৫ ভোট।

স্থগিত কেন্দ্রের মোট ভোট ৩২ হাজার ৯৩০টির সব কটি সরওয়ার পেলেও তিনি সাদিককে অতিক্রম করতে পারবেন না বলে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষা মাত্র।

বরিশালে মোট ভোটার ছিল ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩০০ জন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, এ সিটি ভোটে মেয়র পদে ভোট পড়েছে ৬৩.৭০% ।