জাবালে নূরের সেই দুই গাড়ির নিবন্ধন বাতিল

ঢাকার কুর্মিটোলায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের নিবন্ধন সাময়িকভাবে বাতিল করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2018, 06:49 AM
Updated : 11 August 2018, 08:33 AM

এই নিয়ন্ত্রক সংস্থার ঢাকা মেট্রো-১ সার্কেলের সহকারী পরিচালক (প্রকৌশল) মো. শামসুল কবির বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত পরশু ডাকে এবং ই-মেইলে নিবন্ধন বাতিলের চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিমানবন্দর সড়কের জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের গোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়, আহত হয় আরও ১৪ জন।

শামসুল কবির বলেন, “আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখেছি বাসের চালকরা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাতে গিয়ে ফুটপাতে উঠিয়ে দিয়েছে। এজন্য মোটরযান আইন অনুযায়ী তাদের নিবন্ধন সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছে।”

জাবালে নূর পরিবহনের অধীনে চলাচলকারী ওই দুটি বাসের একটি নিটল মোটর্সের, অন্যটি র‌্যাংগস মোটর্সের নামে নিবন্ধিত। এ কারণে ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে বিআরটিএ।

যে বাসের চাপায় সেদিন দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছিল, সেই ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭ নম্বর বাসের নিবন্ধন নিটল মোটরর্স লিমিটেডের নামে। নিটল মোটরস বাংলাদেশে টাটা ব্র্যান্ডের বাস, ট্রাক ও অন্যান্য মোটরযান আমদানীকারক।

নিটল মোটরসের নামে নিবন্ধন করা বাসটি কিস্তিতে কিনেছিল জাবালে নূর পরিবহন লিমিটেড। নিয়ম অনুযায়ী সব কিস্তি পরিশোধ করার পর এটির মালিক হত জাবালে নূল পরিবহন লিমিটেড।

ওই বাসটি বসিলা থেকে আসাদগেট, কলেজগেট, আগারগাঁও, মিরপুর ১০ নম্বর, কালসি হয়ে আবদুল্লাহপুর রুটে চলাচলের রুট পারমিট রয়েছে।

ঢাকা মেট্রো ব ১১-৭৬৫৭ নম্বর বাসের নিবন্ধন রয়েছে র‌্যাংগস মোটরসের নামে। র‌্যাংগস মোটরস বাংলাদেশে আইশার ব্র্যান্ডের পরিবেশক।

এ বাসটিও জাবালে নূর পরিবহন কিস্তিতে কিনেছে। একই রুটে চলাচলের রুট পারমিট নেওয়া আছে বাসটির জন্য।

বিআরটিএ জানিয়েছে, ঢাকা মেট্রো ব ১১-৭৬৫৭ নম্বর বাসের ফিটনেস সার্টিফিকেটের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৬ সালের ১৮ মে। এরপর বাসটির আর ফিটনেস নবায়ন করা হয়নি। এটির রুট পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছরের ১৯ মে। ট্যাক্স টোকেনের মেয়াদও শেষ হয়েছে এ বছরের ১৯ মে।

সেদিন ওই দুর্ঘটনার পর জাবালে নূরের বাস দুটিসহ কযেক ডজন যানবাহনে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন দেয় বিক্ষূব্ধ শিক্ষার্থীরা।

দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা হওয়ার পর তিনটি গাড়ির চালক ও দুই সহকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে র‌্যাব।

এদিকে বুধবার সকালে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে লাইসেন্সবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বিআরটিএ এর চেয়ারম্যান মো. মশিয়ার রহমান সেখানে বলেন, “জাবালে নূরের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে। তাদের ফিটনেস ও রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে। তাদের ড্রাইভারা এখন জেলে আছেন, তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তারা যেন ভবিষ্যতে কোনো সময় গাড়ি চালাতে না পারে, সেই ব্যবস্থা আমরা নেব।”