তিন সিটির ভোটে সিইসি ‘সন্তুষ্ট’

তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩৯৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৮টির ভোট বা ফল অনিয়ম ও গোলযোগের কারণে স্থগিত করতে হলেও ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ’ ভোট হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2018, 02:06 PM
Updated : 30 July 2018, 03:18 PM

সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে ভোট গ্রহণের পর সন্ধ্যায় ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আই এম স্যাটিসফাইড।”

তিনি জানান, অনিয়ম ও গোলযোগের কারণে বরিশালের একটি ও সিলেটের দুটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছ। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বরিশালে ১৫টি কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে। রাজশাহীতে কোনো কেন্দ্র স্থগিত হয়নি।

“রাজশাহীতে ১৩৮টি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। সিলেটে ১৩৪টির মধ্যে দুটি ব্যতিত বাকিগুলোতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে। বরিশালে ১২৩টির মধ্যে সকালে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। ইসি তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছে। “

সোমবার রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেটের ভোট শেষে আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনের কার‌্যালয় ছাড়ার সময় ভোট নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন সিইসি।

বছর শেষে সংসদ নির্বাচনের আগে এই তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন ছিল কার্যত নৌকা ও ধানের শীষের শেষ লড়াই। দলীয় প্রতীকে স্থানীয় এই নির্বাচন ঘিরে বড় কোনো সহিংসতা না ঘটলেও পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে উত্তাপ ছড়ায়; তৈরি হয় জাতীয় নির্বাচনের আবহ।

বিএনপির অভিযোগ, এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের ‘ভোট ডাকাতির নগ্ন বর্হিপ্রকাশ’ ঘটেছে। রাজশাহী ও বরিশালে অধিকাংশ কেন্দ্র এবং সিলেটে মোট ভোট কেন্দ্রের ৯৫ শতাংশ কেন্দ্র ক্ষমতাসীনরা দখল করেছে নিজেদের মার্কায় ভোট দিয়েছে। আর এই জালিয়াতিতে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দায়িত্ব’ নিজেদের কাঁধে নিয়েছে পুলিশ।

বরিশালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহ ছাড়া বাকি সবাই হয় মাঝবেলায় ভোট বর্জন করেছেন, নয়ত ভোট বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

সিলেট সিটি করপোরেশনে বিএনপির প্রার্থী বলেছেন, ফল যাই হোক, তা তিনি প্রত্যাখ্যান করছেন। আর রাজশাহীতে বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নিজের ভোটও দেননি। তার ভাষায়, গণতন্ত্র যখন ‘বিপন্ন’ তখন ভোট দিয়ে কি হবে?

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলেছে, তিন নগরে ভোট হয়েছে ‘উৎসবমুখর’ পরিবেশে।

সিইসি বলেন, “বরিশালে কিছু কেন্দ্রে অনিয়ম সেখানে হয়েছে। এ সংখ্যা অন্য সিটির তুলনায় বড় ধরনের।”

বরিশালে ভোট বর্জন ও নির্বাচন বাতিলের যে দাবি প্রার্থীরা জানিয়েছেন- সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে নূরুল হুদা বলে, “বরিশালের যেসব অনিয়ম হয়েছে তা প্রত্যাশা করিনি। তা খতিয়ে দেখব। তবে পুনরায় ভোট নেওয়ার অবস্থা হয়নি সেখানে।”

বাসদের প্রার্থীর ওপর ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের হামলার অভিযোগও তদন্ত করার আশ্বাস দেন সিইসি।

রাজশাহীতে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর ভোট না দেওয়ার বিষয় ‘তার ব্যাপার’ বলে মন্তব্য করেন সিইসি নূরুল হুদা।