কেন্দ্রে ঢুকে মারল সিল, ‘চোখে পড়েনি’ কর্মকর্তার

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ার ভোট দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের ব্যাজধারী কর্মী-সমর্থকদের কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট কেড়ে নিতে দেখা গেলেও বিষয়টি চোখে পড়েনি বলে এড়িয়ে গেছেন দায়িত্বরত প্রিজাইডিং কর্মকর্তা।  

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2018, 05:47 AM
Updated : 30 July 2018, 12:28 PM

সোমবার সকাল ৮টায় ভোট শুরুর পৌনে দুই ঘণ্টার মাথায় ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউনিয়ায় সৈয়দা মজিদুন্নেসা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে ব্যক্তিগত গাড়িতে চড়ে নিজের বাড়ি থেকে একশো গজ দূরে মজিদুন্নেসা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে যান ধানের শীষের প্রার্থী সরওয়ার। 

তার ভোটার নম্বর খুঁজতে দেরি হওয়ায় ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এ সময় তারা কেন্দ্রের সামনে হট্টগোল শুরু করেন। কয়েকটি বুথ ঘুরে শেষ পর্যন্ত ৬ নম্বর বুথে নিজের ভোট দেন সরওয়ার।

এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীরা কেন্দ্রের সামনে অবস্থান নিয়ে পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকেন। হট্টগোলের কারণে লাইন ছেড়ে চলে যান ভোটাররা। নৌকার ব্যাজ পরা লোকজনকে সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে দেখা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সরোয়ার কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই নৌকার ব্যাজ পরা একদল লোক ওই কেন্দ্রের কয়েকটি বুথে ঢুকে পড়ে এবং ব্যালট কেড়ে নিয়ে সিল মারতে শুরু করে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আলোচকচিত্রী এ সময় একটি বুথের জানালা দিয়ে ছবি তুললেও পরে দায়িত্বরত পুলিশ সংবাদকর্মীদের সেখান থেকে সরিয়ে দেন। ওই বুথ থেকে আওয়ামী লীগের ব্যাজ পরা কর্মীদেরও বের করে দিতে দেখা যায়। 

এ ঘটনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সৈয়দা মজিদুন্নেসা মাধমিক বিদ্যালয়-১ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সঞ্জয় রত্ন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পরিস্থিতি একটু অশান্ত ছিল, তাই কয়েক মিনিট ভোটগ্রহণ স্থগিত ছিল। এখন আবার ভোট গ্রহণ চলছে। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।”

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালটে সিল মেরেছে- এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “এটি এখনও আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি। পরিবেশ পরিস্থিতি মোকবেলার চেষ্টা করছি। কী করা যায়, সেটা দেখছি।”

এ কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার চারশো সাত জন।

বিএনপির প্রার্থী তার এজেন্টদের বের করে দেওয়ার যে অভিযোগ করেছেন- সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বরিশালের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান বলেন, “কোনো প্রার্থীর এজেন্টকে কেন্দ্রে আসতে বাধা দিলে এবং সেই বিষয়ে আমরা অভিযোগ পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা নেব।”

তার ভাষায়, প্রার্থীর এজেন্টদের হুমকি-ধমকির অভিযোগ করার অর্থ হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে চাপে রাখা।