গুলশান হামলার উদ্দেশ্য ছিল দেশকে অস্থিতিশীল করা: অভিযোগপত্র

দুই বছর আগে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় জড়িত ২১ জনকে চিহ্নিত করে আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 July 2018, 07:01 AM
Updated : 26 July 2018, 02:25 PM

‘চিহ্নিত’ বাকি ১৩ জন ওই হামলার পর বিভিন্ন অভিযানে নিহত হওয়ায় মামলা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে অভিযোগপত্রে।

পুলিশ বলছে, নব্য জেএমবির জঙ্গিরা ছয় মাস আগে থেকে ওই হামলার পরিকল্পনা করে প্রস্তুতি নেয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, দেশকে ‘অস্থিতিশীল’ করা, বাংলাদেশকে একটি ‘জঙ্গি রাষ্ট্র’ বানানো।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে হলি আর্টিজান বেকারিতে পাঁচ তরুণের ওই হামলায় ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে জবাই ও গুলি করে হত্যা করা হয়।

নজিরবিহীন ওই হামলা দেশে জঙ্গিবাদের বিপদজনক বিস্তারের মাত্রা স্পষ্ট করে তোলে। বড় ওই ধাক্কা বাংলাদেশকে বদলে দেয় অনেকখানি।

দুই বছরের বেশি সময় ধরে তদন্তের পর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে সোমবার বিকালে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ওই অভিযোগপত্র জমা দেন।

তার আগে সকালে মিন্টো রোডে পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম তাদের তদন্তের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “তদন্তে উঠে এসেছে, জঙ্গিদের উদ্দেশ্য ছিল দেশকে অস্থিতিশীল করা, বাংলাদেশকে একটি জঙ্গি রাষ্ট্র বানানো।”

হামলায় আহত গোয়েন্দা পুলিশের এসি রবিউল ইসলামকে সহকর্মীরা নিয়ে যান হাসপাতালে। ওই রাতেই মৃত্যু হয় তার।

নজিরবিহীন হামলা

গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় লেকের তীরে হলি আর্টিজান বেকারির সবুজ লন ছিল বিদেশিদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। বিদেশিদের নিয়মিত আনাগোনা এবং শিথিল নিরাপত্তার কারণেই ওই রেস্তোরাঁকে জঙ্গিরা হামলার জন্য বেছে নিয়েছিল বলে তদন্তকারীদের ধারণা।

সেই রাতে পাঁচ তরুণ অস্ত্র হাতে ওই রেস্তোরাঁয় ঢুকে পড়ার পর শুরু হয় ভয়ঙ্কর নৃশংসতা। তারা জবাই ও গুলি করে ২০ জনকে হত্যা করে, যাদের মধ্যে ১৭ জনই ছিলেন বিদেশি নাগরিক। হামলার খবর পেয়ে সেখানে প্রবেশ করতে গিয়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তা বোমায় প্রাণ হারান।

কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওই হামলার খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর শিরোনামে চলে আসে; তখনও অনেকে হলি আর্টিজানের ভেতরে কার্যত জিম্মি হয়ে আছেন।   

সারা রাত উৎকণ্ঠার পর সকালে শুরু হয় সেনাবাহিনীর কমান্ডো দলের অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’। তাদের অভিযানের মধ্যে হামলাকারী পাঁচ তরুণ ও ক্যাফের এক পাচক নিহত হন। ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় মোট ১৩ জনকে।

হামলাকারী পাঁচ তরুণ- নিবরাজ ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল

আসামি যারা

মনিরুল জানান, ওই হামলায় যারা সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন, তারা পাঁচজন হলি আর্টিজানেই নিহত হয়। ওই ঘটনায় জড়িত আরও আটজন নিহত হন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে।

গুলশান হামলায় জড়িত হিসেবে যে ২১ জনকে পুলিশ চিহ্নিত করেছে তাদের মধ্যে জীবিত আট জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।

এই আট আসামির মধ্যে ছয়জন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন, বাকি দুজন পলাতক।

কারাগারে থাকা ছয় আসামি হলেন- জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগান, রাশেদুল ইসলাম ওরফে র‌্যাশ, সোহেল মাহফুজ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান এবং হাদিসুর রহমান সাগর।

পলাতক দুই আসামি শহীদুল ইসলাম খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হয়েছে বলে জানান মনিরুল।

হামলায় অংশ নেওয়া নব্য জেএমবির পাঁচ জঙ্গি নিবরাজ ইসলাম, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল সেদিনই অভিযানে নিহত হন।

আর গুলশান হামলার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ তামিম চৌধুরী নারায়ণগঞ্জে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অভিযানে ও সারোয়ার জাহান আশুলিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে; নুরুল ইসলাম মারজান মোহাম্মদপুরে ডিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’; তানভীর কাদেরী আজিমপুরে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অভিযানে; অবসরপ্রাপ্ত মেজর জাহিদুল ইসলাম রূপনগরে কাউন্টার টেররিজমের অভিযানে; বাসারুজ্জামান চকলেট ও ছোট মিজান চাঁপাইনবাবগঞ্জ অভিযানে এবং আবু রায়হান তারেক কল্যাণপুরের অভিযানে নিহত হন।

জঙ্গি রোহান ইমতিয়াজের সঙ্গে হাসনাত করিম ও অস্ত্র হাতে তাহমিদ (কালো টি-শার্ট পরা); কমান্ডো অভিযানের আগের এই ছবি সোশাল মিডিয়ায় আলোড়ন তোলে

হাসনাত করিমকে অব্যাহতি

গুলশান হামলার মামলায় দুই বছর ধরে বন্দি থাকলেও নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজাউল করিমকে বাদ রেখেই অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।

হামলার দিন সপরিবারে গুলশানের ওই ক্যাফেতে ছিলেন ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী হাসনাত করিম। তাদের উদ্ধারের পর সন্দেহ সৃষ্টি হলে হাসনাত করিমকে পরের মাসেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

হাসনাতের স্ত্রী জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলে আসছিলেন, জিম্মি অবস্থায় জঙ্গিদের বিভিন্ন নির্দেশ মেনে কাজ করতে হয়েছিল তার স্বামীকে। কিন্তু বার বার আবেদন করেও হাসনাত জামিন পাননি।

হাসনাত করিমকে কেন অভিযোগপত্রে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে মনিরুল বলেন, “মামলার সময় এজাহারের কলামে কারো নাম উল্লেখ ছিল না। অনেকেই আমাদের হাতে আটক ছিলেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে যাদের বিরুদ্ধে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে, কেবল তাদের নাম অভিযোগপত্রে এসেছে। যেহেতু হাসনাত করিমের নামে কোনো অভিযোগ আসেনি। তাই তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল বলেন, হলি আর্টিজান থেকে যাদের জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল, তাদের কেউ হাসনাত করিমের বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেননি। হামলার পর সংবাদমাধ্যমে আসা যেসব ছবির ভিত্তিতে হাসনাত করিমের বিষয়ে সন্দেহ জোরালো হয়েছিল, সেগুলো বিশ্লেষণ করেও তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

“নব্য জেএমবি একটি সাংগঠনিক পরিকল্পনা নিয়ে ওই হামলা করে। তাদের পরিকল্পনার কোথাও আমরা হাসনাত করিমের সম্পৃক্ততা পাইনি। ২১১ জনের সাক্ষ্যতেও তার নাম আসেনি। তাই হাসনাত করিমকে অভিযোগপত্রে নেওয়া হয়নি।”

অভিযানের সকালে পাঁচ জঙ্গির সঙ্গে নিহত হলি আর্টিজানের পাচক সাইফুল ইসলামকে শুরুতে সন্দেহের তালিকায় রাখা হলেও অভিযোগপত্রে তাকে আসামি করা হয়নি।

জঙ্গি হামলার কয়েক ঘণ্টার মাথায় ওই বেকারির সহকারী বাবুর্চি জাকির হোসেন শাওনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ আটক করেছিল। এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। শাওনের বিষয়েও তদন্তকারীরা শুরুতে জঙ্গি সম্পৃক্ততার সন্দেহের কথা বলেছিলেন। তবে তদন্তে তারও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এরা এখন স্মৃতির পাতায়; গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছিলেন তারা

ছয় মাস আগে পরিকল্পনা

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আসামিরা হলি আর্টিজানে হামলার জন্য ছয় মাস আগেই পরিকল্পনা শুরু করেছিল বলে তাদের তদন্তে উঠে এসেছে।

“তারা এ ঘটনার মাধ্যমে সরকারকে কোণঠাসা করে দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে সরকার চাপের মুখে ফেলতে চেয়েছিল, যাতে ইনভেস্টররা দেশ থেকে চলে যায়, এক্সপোর্টাররাও যাতে না আসে, পাশাপাশি উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বাংলাদেশে চলছিল এগুলোর যারা বিদেশি কনসাল্টেন্ট ছিল, তারা যাতে এই দেশে আর না আসে…।

“অর্থাৎ দেশ যাতে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সরকার যাতে বিব্রত হয় এবং একটা পর্যায়ে সরকার আসল জঙ্গিদের ধরতে না পারে যাতে সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন করে, মানুষকে অতিষ্ঠ করে তোলে। যার ফলে সরকারের বিরুদ্ধে যাতে বিক্ষোভে সাধারণ মানুষকে কাজে লাগাতে পারে। এজন্যই তারা হামলা করেছিল।”

মনিরুল বলেন, গুলশানের হামলাকারীদের আরেকটি উদ্দেশ্য ছিল বড় ধরনের নৃসংশতা ঘটিয়ে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করা।

“যাদের অস্ত্র আছে, অর্থ আছে, টেকনোলজি আছে, তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা ছিল একটা বড় উদ্দেশ্য। তারা চিন্তা করেছিল, বেশি সংখ্যক বিদেশিকে হত্যা করতে পারলে দেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিপুল সংখ্যক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে। পাশাপাশি ইন্টারন্যাশনাল টেরোরিস্ট গ্রুপের দৃষ্টি আকর্ষিত হবে, সেজন্যই হলি আর্টিজানকে বেছে নিয়েছিল।”

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, জঙ্গিরা আরও কয়েকটি জায়গা ঘুরে দেখলেও হলি আর্টিজানে তেমন কোনো নিরাপত্তার ব্যবস্থা না থাকায় ওই জায়গাটিই তারা বেছে নেয়। হামলার জন্য যাদের বাছাই করা হয়েছিল, তাদের বিভিন্ন স্থানে দলের ‘অপারেশন’ দেখতে পাঠানো হয়, যাতে তারা বাস্তব ধারণা পায়।

জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে থাকা হলি আর্টিজান বেকারিতে ঢুকতে গিয়ে বোমা আর গুলির মধ্যে আহত হন বনানী থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।

বিদেশি সম্পৃক্ততা মেলেনি

তদন্তের মাঝ পর্যায়ে গত বছর মনিরুল বলেছিলেন, হামলার মূল পরিকল্পনাকারী (মাস্টারমাইন্ড) তামিম চৌধুরী, মূল প্রশিক্ষক (মাস্টার ট্রেইনার) মেজর জাহিদ কিংবা তানভির কাদেরি, নুরুল ইসলাম মারজান ছিলেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসামি।

পুলিশ কর্মকর্তাদের ভাষ্য, গুলশান হামলার জন্য বগুড়ার দুই জঙ্গিকে নিয়োগ করেন রাজীব আর বসুন্ধরায় বাসা ভাড়া ও জঙ্গিদের উদ্বুদ্ধও করেন তিনি।

সাগর সীমান্তের ওপার থকে আসা অস্ত্র ঢাকায় মারজানের কাছে পৌঁছান। বাশারুজ্জামান মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশ থেকে দুই দফা হুন্ডির মাধ্যমে আসা ২০ লাখ টাকা গ্রহণ করেন এবং সেই টাকা গুলশান হামলায় ব্যবহৃত হয়।

অভিযোগপত্র দেওয়ার আগে মনিরুল বলেন, আন্তর্জাতিক কোনো জঙ্গি নেটওয়ার্ক, আইএস, হিযবুত তাহরীর বা কোন বিদেশি সংস্থার সঙ্গে হলি আর্টিজানের হামলাকারী বা নব্য জেএমবির কারও সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ তারা তদন্তে পাননি। 

“তামিম চৌধুরী বা তানভীর কাদেরীর কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারলে হয়ত কোনো তথ্য বেরিয়ে আসত। বিদেশি নেটওয়ার্কের যোগাযোগ থাকলে তা একমাত্র তামিম চৌধুরীর সাথেই থাকতে পারত। কিন্তু তাকে জীবিত ধরতে না পারায় জানা সম্ভব হয়নি।”

কমান্ডো অভিযানের পর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে হলি আর্টিজান থেকে বেরিয়ে আসছেন হাসনাত করিম

সাক্ষী ২১১ জন

মনিরুল জানান, এ মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে মোট ২১১ জনকে। তাদের মধ্যে ১৪৯ জন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ওই ঘটনা সম্পর্কে জানেন। প্রতিবেদনের সঙ্গে সব মিলিয়ে ৭৫টি আলামত আদালতে পাঠানো হয়েছে।

“যারা বেকারির কর্মচারী ছিল, এমন একটা বড় সংখ্যার মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বেরিয়ে এসেছে। তাদের আমরা সাক্ষী হিসেবে দিয়েছি। তাদের জবানবন্দি রেকর্ড হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য বিভিন্ন আলামত আমরা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছিলাম, সেই রিপোর্টও এসেছে। সেগুলিও আমরা আদালতে পাঠিয়েছি।”

এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল বলেন, ওই ঘটনায় যারা সরাসরি অংশ নিয়েছিল, তারা ঘটনাস্থলেই মারা যাওয়ায় তদন্তে বেশি সময় লেগেছে।

“আবার কিছু জীবিত ছিল যাদের ধরতে বিভিন্ন অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু সেই অভিযানেও অনেকে মারা যায়।… নব্য জেএমবির ছোট কিংবা বড় কোনো নেতাকেই আমরা জীবিত গ্রেপ্তার করতে পারিনি। তাই তাদের অন্য কোনো বড় উদ্দেশ্য ছিল কিনা- তা জানা সম্ভব হয়নি। জীবিত কাউকে ধরতে পারলে হয়ত আরও বেশি তথ্য পাওয়া যেত।”

মনিরুল বলেন, “জঙ্গি হামলার ঘটনায় দেশি বিদেশি ও পুলিশ সদস্যরা যারা মারা গিয়েছিল, তাদেরকে আমরা উদ্ধার করতে পারিনি। এটা আমাদের ব্যর্থতা ছিল।”