কোটার আন্দোলনকারীদের মারধর

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী চারজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2018, 02:45 PM
Updated : 22 July 2018, 02:45 PM

অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন, রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাষ্কর্যে এক বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাটা সিগন্যাল এলাকায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের মারধর করে।

আন্দোলনকারী বাংলাদেশ শিক্ষার্থী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক সোহরাব হোসেনকে ছাত্রলীগ তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন আরেক যুগ্ম-আহ্বায়ক রাতুল সরকার৷

তবে পরে কাউসার সুমন নামে আরেক নেতা ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন, হামলা করলেও কাউকে ‘তুলে নেয়নি’ ছাত্রলীগ।

বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে ফেইসবুক লাইভে রাতুল বলেন, “আমি, নিয়াজী আর সোহরাব পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করে সিএনজিতে করে  আসছিলাম। ছাত্রলীগের ৮/১০ জন সন্ত্রাসী আমাদের সিএনজি আটকায়। তারা সোহরাব ভাই আর নিয়াজী ভাইকে তুলে নিয়ে যায় এবং আমাকেও নেওয়ার চেষ্টা করে। প্রায় ৫/৭ মিনিট তাদের সাথে আমার ধ্বস্তাধস্তি হয়। আমার জামা ছিড়ে যায়। আমি কোনো রকমে পালিয়ে আসছি।”

প্রত্যক্ষদর্শী একজন বিডিনিউজ  টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "বাটা সিগন্যাল মোড়ে ছাত্রলীগের কয়েকজন ওদের সিএনজি থেকে নামিয়ে প্রথমে মারধর করে। রাতুল আর নিয়াজী পালিয়ে যায়। সোহরাবকে তারা একটি মোটর সাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। যাওয়ার পথে এক ট্রাফিক পুলিশের প্রশ্নে তারা বলেন, ‘নিউ মার্কেট থানায় নিয়ে যাচ্ছি’।"

নিউ মার্কেট থানায় গিয়ে সোহরাবকে সেখানে পাওয়া যায়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান উজ্জ্বল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজাসহ প্রায় আটজন নেতা-কর্মীকে সেখানে দেখেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রত্যক্ষদর্শী।

উজ্জ্বল মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমরা তিনজন বাটা সিগনাল দিয়ে যাচ্ছিলাম। একটা সিএনজি আমার বাইকের পেছনে ধাক্কা দেয়। আমরা তখন সিএনজি থামিয়ে ড্রাইভারের সাথে কথা বলি। ড্রাইভারের সাথে তর্কাতর্কি হয়। ভেতরে তিনজন ছেলে ছিল, ওদের আমি চিনি না। ওদের সাথে কোনো ঝামেলা হয় নাই। ওরা যার যার মতো চলে গেছে।”

এদিকে ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক কমিটির সহ-সভাপতি দিদার মুহাম্মদ নিজামুল ইসলাম,  জিয়া হল ছাত্রলীগের উপ-কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা-কর্মী এক আন্দোলনকারীকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতর মারধর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আন্দোলনকারীদের উপর হামলা, মামলা এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক নিপীড়নের প্রতিবাদে রোববার বিকাল ৩টায় ক্যাম্পাসের রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।

এই সমাবেশের শেষ পর্যায়ে উপস্থিন হন পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র বিন ইয়ামিন মোল্লা। তিনি ২৫ জুলাই বুধবার সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।