রোববার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭ বছর উদযাপন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, “কৃষির সাফল্যকে অব্যাহত রাখতে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষক অর্থাৎ উৎপাদনকারী পর্যায়ে ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে কৃষকরা উৎপাদনে আগ্রহী হবে।
“আমাদের দেশে মৌসুমী অনেক ফল ও কৃষিপণ্য সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। অনেক সময় উৎপাদনকারীরা এসব পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। কিন্তু সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ করা গেলে এসব পণ্য দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখতে পারত।”
এ বিষয়ে সরকারের পাশাপাশি কৃষিবিদ, কৃষিবিজ্ঞানী ও কৃষি সম্প্রসারণবিদসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান আবদুল হামিদ।
৫৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪ হাজার ৩শ’ গ্রাজুয়েট ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অংশ নেওয়ার কথা ছিল। শনিবার রাতে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠান মঞ্চ পুড়ে যাওয়ায় পরে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
“জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব আজ বাস্তবতা। জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে। তাই কৃষিতে আমাদের অর্জিত সাফল্যকে ধরে রাখার পাশাপাশি একে এগিয়ে নিতে হলে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সমস্যাবলীর সমাধানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।”
রাষ্ট্রপতি বলেন, “জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সকলকে সচেতন হতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার যুৎসই কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। দুর্যোগ সহনশীল বিভিন্ন জাতের উদ্ভাবন করতে হবে।”
হাওর এলাকার মানুষ আবদুল হামিদ বলেন, “আপনারা জানেন, হাওর এলাকার কৃষকদের বছরে একটি মাত্র ফসল বোরোর উপর নির্ভর করেই জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। কিন্তু অনেক সময় আগাম বন্যার কারণে এ ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে হাওর এলাকার জনগণের পাশাপাশি দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তাই বোরো ধানের উৎপাদনকাল কমিয়ে আনা গেলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।”
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আলী আকবরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান, বাকৃবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সংসদ সদস্য মো. আবদুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান, উপ উপাচার্য মো. জসিমউদ্দিন খান, অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সম্পাদক বদিউজ্জামান বাদশা। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক উপাচার্য এম এ সাত্তার মন্ডল।
পরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চত্ত্বরে হাওড় ও চর উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন রাষ্ট্রপতি। এর আগে দুপুরে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যান আবদুল হামিদ। অনুষ্ঠান শেষে ঢাকায় ফেরেন তিনি।