কূটনীতিকদের মন্তব্যে হতাশ ঢাকা

কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে কয়েকটি বিদেশি মিশন বিবৃতি দেওয়ায় অসন্তোষ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 July 2018, 04:04 PM
Updated : 19 July 2018, 04:04 PM

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার ঢাকায় নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের মন্ত্রী বলেছেন, “এই আন্দোলন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর একটি ষড়যন্ত্রে রূপ নিয়েছে, যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়।”

কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার নিন্দা এবং এই আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে সম্প্রতি বিবৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও অধিকাংশ ইউরোপীয় দেশের দূতাবাস।

কোটা নিয়ে কূটনীতিকদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরিতে বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সংস্কৃতির জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব এগিয়ে নিতে ১৯৭২ সালে কোটা ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়।

তিনি বলেন, নারী, প্রতিবন্ধী, ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু এবং মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারদের জন্য কোটা চালু করা হয়েছে সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুযোগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে।

“তারপরেও বিসিএস পরীক্ষা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে অধিকাংশ নিয়োগ হয় মেধা তালিকা থেকে।”

তার দেওয়া তথ্য মতে, ২০১২ সালে ৩৩তম বিসিএসে মেধা তালিকা থেকে নিয়োগ হয়েছে ৭৭ দশমিক ৪ শতাংশের, ২০১৫ সালে ৩৫তম বিসিএসে মেধা তালিকা থেকে এসেছে ৬৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং ২০১৬ সালে ৩৬তম বিসিএসে নিয়োগের ৭০ দশমিক ৩৮ শতাংশই হয়েছে মেধা তালিকা থেকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাসের পরেও আন্দোলন অব্যাহত রাখা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “স্বার্থান্বেষী একটি মহল এই আন্দোলন ছিনিয়ে নিয়ে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে।

“কোটা সংস্কারের এই আন্দোলনে সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম হয়েছে। বিশৃঙ্খলাকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন ও তার পরিবারের ওপর হামলা করেছে।

“এসব হামলার সঙ্গে ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াত পরিচালিত হামলার মিল রয়েছে, দুটি প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে যা প্রত্যাখ্যান করেছিল ইইউ পার্লামেন্ট।” 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ‘মানবাধিকার রক্ষা ও তা এগিয়ে নিতে’ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে সরকার।

এক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সফরে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের প্রশংসা করে ‘অর্থনৈতিক মিরাকল’ অভিহিত করার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

বৈঠকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয় তুলে মাহমুদ আলী বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ মিয়ানমার নাগরিককে আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশ এখন ‘বিরাট চ্যালেঞ্জ’ মোকাবেলা করছে।

“আমরা তাদের মিয়ানমারে নিরাপদ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনের জন্য কাজ করছি।”