ভাসাভির চেয়ারম্যান-এমডির ঋণ পরিশোধের প্রমাণ চায় হাই কোর্ট

অর্থ আত্মসাতের মামলায় জামিনপ্রাপ্ত ভাসাভি ফ্যাশন লিমিটেড ও তাহমিনা ডেনিম লিমিটেডের চেয়ারম্যান ইয়াসির আহমেদ খান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমডি) কামাল জামান মোল্লা জামিনের শর্ত অনুযায়ী আত্মসাতকৃত টাকার কিস্তি পরিশোধ করছেন কি না তা জানতে চেয়েছে আদালত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2018, 06:49 PM
Updated : 18 July 2018, 06:49 PM

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ব্যাংক স্টেটমেন্টসহ হলফনামা আকারে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের তা জানাতে বলা হয়েছে। 

বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের এক মামলায় এ দুই আসামির জামিনের বিরুদ্ধে দুদকের একটি আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়।

আদালতে এ দুই আসামির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. হেলাল উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। এ মামলায় দুদকের আইনজীবী হলেন সৈয়দ মামুন মাহবুব।

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন। 

ভাসাভি ফ্যাশন লিমিটেডেরে চেয়ারম্যান ইয়াসির আহমেদ খান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কামাল জামান মোল্লা, বেসিক ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক শিফার আহমেদ, উপব্যবস্থাপক এস এম জাহিদ হাসান (চাকরিচ্যুত) ও সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মঞ্জুর মোরশেদসহ ছয়জনকে আসামি করা হয় এ মামলায়।

মামলায় বলা হয়, আসামি ইয়াসির আহমেদ খান ও কামাল জামান মোল্লা গুলশানের বেসিক ব্যাংক লমিটেডের শাখা থেকে ভুয়া জামানত দিয়ে এবং ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ৪৯ কোটি ৯৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এছাড়াও আসামিদের বিরুদ্ধে ৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ আত্মসাতের অভিযোগে একই দিনে আরও দুটি মামলা হয়।

এর মধ্যে দুই মামলায় ইয়াসির, কামাল উভয়ই আসামি। অন্য মামলায় আসামি শুধু ইয়াসির।

ঋণ আত্মসতের এসব মামলায় ২০১৬ সলের ৮ ডিসেম্বর শিক্ষা ভবনের সামনে থেকে দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গ্রেপ্তারের পর আত্মসাতকৃত টাকা কিস্তিতে পরিশোধের নির্দেশনা চেয়ে হাই কোর্টে রিট করেন ইয়াসির ও কামাল।

রিটের শুনানি নিয়ে ওই বছরের ১৮ অক্টোবর আদেশ দেয় হাই কোর্ট। আদেশে দুই বছরের মধ্যে সমান হারে ৪০টি কিস্তিতে টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয় আদালত।

এই পর্যন্ত চার কোটি ২৩ লাখ ৭৩ হাজার ৫০৪ টাকা পরিশোধ ও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতে তারা জামিন চাইলে গত বছরের ১১ জানুয়ারি মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা তাদের জামিন দেন।

মানিক বলেন, “গ্রেপ্তারের এক মাসের মধ্যে জামিন হওয়ায় দুদক জামিনের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে ফৌজদারি রিভিশন আবেদন করে। সে আবেদনের শুনানিতেই বুধবার হাই কোর্ট জানতে চায় জামিনপ্রাপ্ত ভাসাবি ফ্যাশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও এমডি কিস্ত পরিশোধ করছে কি না।

“দুই বছরের সময়সীমার মধ্যে এখন পর্যন্ত কত টাকা জমা দেওয়া হয়েছে বা কয়টা কিস্তি পারিশোধ হয়েছে। জবাবে আসামিপক্ষের আইনজীবী কোনো সদুত্তর দিতে না পারলে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ব্যাংক স্টেটমেন্টসহ হলফনামা আকারে তা জানাতে নির্দেশ দেন আদালত।”