তিন সিটিতে গোয়েন্দা নজরদারি ‘বাড়ানোর নির্দেশনা আসছে’

মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নির্দেশনাসহ খসড়া পরিপত্র ইসি সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 July 2018, 06:17 PM
Updated : 17 July 2018, 06:29 PM

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানান, আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বৈঠকের পর ইসির প্রস্তাবিত কর্মপরিকল্পনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়।

এখন নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন পেলেই এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি হবে।

বরাবরের মতো সে মোতাবেক তিন সিটিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন ইসির যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহমদ খান। 

খসড়া পরিপত্রে বলা হয়েছে, জঙ্গি তৎপরতা ও গুজব রটানো রোধে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে। চলমান আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রাখতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের যৌথ সভা করতে হবে। রিটার্নিং অফিসারের সার্বিক সমন্বয়ে ভোটকেন্দ্র ও নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হবে।

এ নির্বাচন সামনে রেখে ২৮ থেকে ৩১ জুলাই মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, নির্বাহী-বিচারিক হাকিমসহ মোবাইল-স্ট্রাইকিং ফোর্স এবং সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ইসির চাহিদা অনুযায়ী রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবারের আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা ভোট সামনে রেখে জঙ্গি তৎপরতা ও সহিংসতা যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে সে দিকে নজর রাখার ওপর ‍গুরুত্বারোপ করেন। 

বরিশাল ও সিলেটের চেয়ে বিশেষ করে রাজশাহীতে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়।

তিন সিটি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বৈঠকের বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সোমবার বলেছিলেন, “সংশ্লিষ্টরা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের। কমিশন যেভাবে চায় সেভাবে সব ধরনের সহায়তা করবেন তারা।”

ভোটের পরিবেশ শান্ত ও ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ যাতে বজায় থাকে সেজন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

সচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অহেতুক হয়রানি না করার নির্দেশনা রয়েছে।

“বিনা ওয়ারেন্টে কখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না- তা বলা হয়নি। স্বাভাবিকভাবে কোনো এলাকায় আমলযোগ্য অপরাধ যদি হয় তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারবে। ফৌজদারি কার্যবিধির যে অপরাধগুলো হয় তাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারবে। আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কাউকে অহেতুক নির্বাচনকেন্দ্রিক হয়রানি যেন না করা হয়। কোনো আতঙ্ক সৃষ্টি যেন না করা হয়।”

সিটি করপোরেশন

মোবাইল ফোর্স (ওয়ার্ড প্রতি ১টি)

স্ট্রাইকিং ফোর্স (৩ ওয়ার্ডে ১টি)

র‌্যাব টিম

বিজিবি টিম

সাধারণ কেন্দ্র

গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র

রাজশাহী

৩০

১০

৩০

১৫

২২ জন

২৪ জন

বরিশাল

৩০

১০

৩০

১৫

২২ জন

২৪ জন

সিলেট

৩০

১০

২৭

১৪

২২ জন

২৪ জন

ভোট যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রচারে জোর দিচ্ছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীরা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগও করে আসছেন।

এ অবস্থায় মঙ্গলবার রাজশাহীতে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর পথসভার কাছে তিনটি হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনাও হয়েছে।

বহিরাগত নিষিদ্ধ ২৭ জুলাই, প্রচার বন্ধ ২৮ জুলাই মধ্যরাতে

৩০ জুলাই সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত তিন সিটিতে একটানা ভোটগ্রহণ চলবে।

ভোট শুরুর ৩২ ঘণ্টা আগে ২৮ জুলাই রাত ১২টা থেকে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা বন্ধ করতে হবে। মিছিল-শোভাযাত্রাও নিষিদ্ধ থাকবে ১ অগাস্ট পর্যন্ত।

সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সিটি এলাকার বাসিন্দা নন এমন ব্যক্তিদের ২৭ জুলাই রাত ১২টায় নির্বাচনী এলাকা ছাড়তে হবে।

প্রভাবশালীরা নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করলে বা অবৈধ প্রভাবের চেষ্টা করলে পুলিশ ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারবে।

ভোটের তিন দিন আগে থেকে ভোটের পরে আরও তিন দিন পর্যন্ত বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্সধারীদের জন্য অস্ত্র বহনে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।