রোববারের এই অগ্নিকাণ্ডে বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। বিমান চলাচলেও কোনো বিঘ্ন ঘটেনি বলে বেসামরিক বিমান চলাচল (সিভিল এভিয়েশন) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বিকালে বিমানবন্দরের টার্মিনাল-২ এ দোতলার ইমিগ্রেশন অফিসের কাছে ধোঁয়া দেখার পর সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন; খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস যায় আগুন নেভাতে।
বিকাল ৬টার দিকে এই আগুনের সূত্রপাত ঘটে বলে ফায়ার সার্ভিস ও ইমিগ্রেশন পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের উত্তরা স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ৬টা ১০ মিনিটে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের সাতটি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে।”
ওসি ইমিগ্রেশন (জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার) তাসমিন আশরাফ সোয়া ৬টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুরো বিমানবন্দর ধোঁয়ায় ভরে গেছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। ইমিগ্রেশনের কাজও বন্ধ হয়ে গেছে।”
কোথায় আগুন লেগেছে কিংবা কোন স্থান থেকে ধোঁয়া আসছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু তখন জানাতে পারেননি তিনি।
এরপর পৌনে ৭টার দিকে সিভিল এভিয়েশনের পরিচালক আবদুল্লাহ আল ফারুক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সব কিছু স্বাভাবিক। এয়ারলাইন্স চলাচল ও ইমিগ্রেশন কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।”
আগুনের বিষয়ে তিনি বলেন, “ইমিগ্রেশন পর লবিতে যেখানে যাত্রীরা বসেন সেখানে ধোঁয়া দেখতে পেয়ে সবাই ভয় পেয়ে গিয়েছিল। কোথাও কোনো আগুন দেখা যায়নি। ধোঁয়ায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।”
তবে এই ধোঁয়ার উৎস কী, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি তিনিও।
৭টার দিকে বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বপালনকারী সংস্থা এপিবিএনের কমান্ডিং অফিসার রাশেদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগুন দেখা যায়নি। ইমিগ্রেশনের পর লবিতে স্মোক দেখে অনেকে ভয় পেয়েছেন।”
এই ধোঁয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ধারণা করছি, কোথাও বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে ধোঁয়া দেখা যেতে পারে।”
এরপর সোয়া ৭টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে সিলিংয়ে আগুন লাগে, সেখান থেকে ধোঁয়ার উৎপত্তি হয়।”
“এখন সেই সিলিংগুলো খুলে ধোঁয়ার উৎপত্তিস্থল জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভয়ের কিছু নেই, কিছুক্ষণের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে,” বলেন তিনি।
বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন রাতে মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হকের বরাত দিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিমানবন্দরে ধোঁয়া উদগিরণ হওয়ার পরই নিরাপত্তার দায়িত্ব যারা পালন করেন তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন। সেখানে সত্যিকার অর্থে আগুন লাগার মতো কিছু ঘটেনি।”
গত বছরের ১১ অগাস্ট শাহজালাল বিমানবন্দরের টার্মিনাল-১ এ আগুন লেগেছিল। তাতে প্রায় দুই ঘণ্টা বিমান উড্ডয়নসহ টার্মিনাল ভবনে কার্যক্রম বন্ধ থাকে। অগ্নিকাণ্ডে কোনো প্রাণক্ষয় না হলেও ৩৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
গত দুই বছরে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিমানবন্দরটিতে অন্তত ছয় বার অগ্নিকাণ্ড ঘটে।