মঞ্জুরুল ইমাম হত্যা: রায় দিতে বিব্রত হাই কোর্ট বেঞ্চ

খুলনার আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল ইমাম হত্যামামলার রায় দিতে বিব্রত বোধ করেছে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 July 2018, 03:14 PM
Updated : 12 July 2018, 03:25 PM

আলোচিত এই মামলাটিতে ডেথ রেফারেন্স ও আসামির করা আপিলে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে গত ৪ জুলাই বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার রায়ের জন্য রেখেছিল।

সে অনুযায়ী বেঞ্চের দিনের কার্যতালিকার প্রথমেই ছিল মামলাটি। কিন্তু রায় না দিয়ে মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়ে তা প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।

এই আদালতে দায়িত্বে থাকা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালত রায় দিতে বিব্রতবোধ করায় মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়ে আদেশ দিয়েছে।”

তিনি জানান, এখন নিয়ম অনুযায়ী মামলার নথি প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। প্রধান বিচারপতি মামলাটি শুনানির জন্য নতুন বেঞ্চ গঠন করে দেবেন। সেই বেঞ্চে মামলাটির আবার শুনানি হবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী সরোয়ার আহমেদও এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

২০০৩ সালের ২৫ অগাস্ট খুলনা নগরীর শামসুর রহমান সড়কের নিজ বাসভবন থেকে রিকশা করে আদালতে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীদের গুলি ও বোমা হামলায় নিহত হন মঞ্জুরুল ইমাম।

অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইমাম খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদেরও সদস্য ছিলেন তিনি।

হামলায় মঞ্জুরুল ইমামের সহযাত্রী আইনজীবী বিজন বিহারী মণ্ডল এবং রিকশাচালক সাইদুল ইসলাম আকন্দও নিহত হন।

ঘটনার দিনই মঞ্জুরুল ইমামের ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে খুলনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন।

মঞ্জুরুল ইমাম

২০০৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিচারিক আদালতে দেওয়া হত্যা মামলার রায়ে আসামিদের সবাই বেকসুর খালাস পান।

বিস্ফোরক আইনের মামলায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক মো. শাহজাহান হাওলাদার ২০০৪ সালের ১১ মার্চ চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

অভিযুক্তরা হলেন- শুকুর গাজী, শেখ আব্দুল রাব্বি ওরফে রিপন, গণেশ ব্যানার্জী, ইমাম সরদার ওরফে হাসান ইমাম।

ইমাম সরদার পরে জামিনে থাকাবস্থায় ২০০৫ সালে রূপসা উপজেলায় ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হন।

২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল বিস্ফোরক আইনের মামলায় চরমপন্থি দলের সক্রিয় সদস্য শুকুর গাজীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। অন্য দুই আসামি শেখ আবদুল রাব্বী ওরফে রিপন ও গণেশ ব্যানার্জি বেকসুর খালাস পান।

শুকুর গাজীর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য খুলনার আদালত থেকে হাই কোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। এই আসামি আবার দণ্ড মওকুফ চেয়ে আপিলও করেন।

এই ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ই বৃহস্পতিবার হওয়ার কথা ছিল, যা ঝুলে গেল।