‘অপার অধ্যবসায়েই তিনি জ্ঞানতাপস শহীদুল্লাহ’

জ্ঞানতাপস  ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ রচনা বাঙালি আত্ম-আবিষ্কারে ‘প্রণোদনা’ দেয় বলে তার স্মরণসভায় মন্তব্য করেছেন  আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক জীনাত ইমতিয়াজ আলী।

নিজস্ব প্রতিবেদকজয়ন্ত কুমার সাহা, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 July 2018, 06:09 PM
Updated : 11 July 2018, 06:09 PM

বহুভাষাবিদ, গবেষক ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ১৩৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার বিকালে  বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আয়োজিত ‘মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ভাষানীতি ও ভাষা পরিকল্পনা-ভাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে একক বক্তৃতা প্রদান করেন অধ্যাপক জীনাত ইমতিয়াজ আলী।

অধ্যাপক জীনাত ইমতিয়াজ আলী বলেন, “নিরলস শ্রম ও অপার অধ্যবসায়ই তাকে জ্ঞানতাপস এবং সমকালীন বিদ্বৎ সমাজের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিতে রূপান্তরিত করেছে। তার চিন্তাজগৎ ও সৃষ্টিকর্ম আমাদের সমৃদ্ধ করে, তার রচনা আমাদের আত্ম-আবিষ্কারে প্রণোদিত করে।”

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ‘বৈচিত্র্যপূর্ণ’ কর্মজীবন সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে জীনাত ইমতিয়াজ আলী বলেন, “অন্যান্য পেশার চেয়ে শিক্ষকতাকেই তিনি শ্রেয়তম পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন এবং অবশিষ্ট জীবনে সেই পরিচয়কেই মহিমান্বিত করেছেন।

“ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর রচনাসম্ভার বিষয়-বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ- গবেষণামূলক প্রবন্ধ, সৃষ্টিশীল রচনা, অনুবাদকর্ম, শিশুতোষ রচনা, পাঠ্যবই প্রণয়ন, অভিধান সংকলন- সর্বত্রই তার সাফল্য ও সার্থকতা অপার।”

পাকিস্তান আমলে রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে উদ্ভূত বিতর্কে  দ্বিধাহীন চিত্তে বাংলার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর।

তার এই অবদানের কথা স্মরণ করতে গিয়ে অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন, “এটা তার জন্য কেবল আবেগের বিষয় ছিল না। বরং ভাষাবিজ্ঞানী হিসেবেও তিনি মনে করতেন মাতৃভাষার মর্যাদা যে কোনো নাগরিকের কাছে প্রথম ও প্রধান।

“তার ভাষাভাবনা ও নানামুখী চিন্তার স্মারক তার অভিভাষণগুচ্ছ।”

অনুষ্ঠানের শেষে এই একক বক্তা বলেন, “আমরা আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিসহ জাতীয় জীবনের যেকোনো সঙ্কটে মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করতে পারি; লাভ করতে পারি অনিবার্য নির্দেশনা।”

অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, “ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ একজন প্রণম্য ভাষাবিদই; একই সঙ্গে তিনি বাংলা ভাষার জন্য সংগ্রামের ক্ষেত্রে অগ্রবর্তীদেরও একজন।

“বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা বিষয়ে যেমন তিনি তার জোরালো অবস্থান ব্যক্ত করেছেন তেমনি বাংলা হরফ পরিবর্তনসহ পাকিস্তান সরকারের নানা পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সাহসের সঙ্গে রুখে দাঁড়িয়েছেন।”

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর পৌত্রী শান্তা মারিয়া, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার।