বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টায় জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি জিয়াউদ্দিন তারিক আলী ও ড. সারওয়ার আলী পানি পান করিয়ে শিক্ষকদের অনশন ভাঙান।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ৩২ দিন বেশি সময় ধরে অবস্থান করছিলেন নন-এমপিও শিক্ষকরা। এর মধ্যে শেষ ১৭ দিন ধরে ছিলেন ‘আমরণ অনশনে’।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে কয়েকটি শর্ত দিয়ে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে আলাদা বরাদ্দ রাখা হবে বলে বাজেটের আগে জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। কিন্তু বাজেটে এমপিও নিয়ে কোনো ঘোষণা না থাকায় ফের আন্দোলনে নামেন নন-এমপিও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা।
তাদের আন্দোলনের মধ্যে গত ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপিওভুক্তির কার্যক্রম দ্রুত শুরুর কথা জানান সংসদে।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্বগ্রহণের পরই শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সারাদেশে এক হাজার ৬২৪টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “এই নীতিমালা অনুসরণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির বিষয়ে দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এ লক্ষ্যে অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন গ্রহণ ও ব্যবস্থাপনা এবং বিধিমতে প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের জন্য পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
অনশনস্থলে উপস্থিত হয়ে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্বাসের কথা শিক্ষকদের সামনে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংসদে যে বিবৃতি দিয়েছেন, তাতে আমরা আপনাদের যে সমস্যা- তার সমাধানের আশা দেখতে পাই। আপনারা যে দাবি-দাওয়া জানিয়েছেন, সেটা সামনে রেখে আশা করি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমন একটা উপায় বের করবে, যাতে এই অবস্থার উপযুক্ত সমাধান পাওয়া যাবে।
এরপর নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশন সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার অনশন ভাঙাতে আসা নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের উদ্দেশ্যে মাহমুদুন্নবী বলেন, “আপনি আমাদের শিক্ষকদের শিক্ষক। আপনি এসেছেন, অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী যে আশ্বাস দিয়েছেন, আমরা আশা করি তিনি তা বাস্তবায়ন করবেন।
“আজকে জাতীয় অধ্যাপক এসেছেন। উনি যা বলবেন, আমরা তাই পালন করব।”
এরপরই পানি পান করে অনশন ভাঙেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
এর আগে সকালে শিক্ষামন্ত্রী এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের আলোচনা হয় বলে শিক্ষক নেতা মাহমুদুন্নবী জানান।
“শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে সরকারের বিভিন্ন প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ অব্যাহত আছে, যেসব শিক্ষক এমপিওভুক্ত হবেন তারা জুলাই মাস থেকে বেতন পাবেন। আমরাও আশা করছি শিগগিরই স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্ত হবে।”
মাহমুদুন্নবী ছাড়াও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ বিনয় ভূষণ রায়, সদস্য শফিকুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন ও জহুরুল ইসলাম মন্ত্রী-সচিবের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন।