রাজধানীতে তরুণ স্থপতি ‘নিখোঁজ’

আবাসন নির্মাতা কোম্পানি শেলটেকের একজন স্থপতি গত তিন দিন ধরে নিখোঁজ জানিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে পরিবার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2018, 10:02 AM
Updated : 10 July 2018, 10:29 AM

স্থপতি বিএমএ মাহফুজ নবীন (৩৮) পরিবার নিয়ে থাকতেন ঢাকার ভাষানটেকে। গত রোববার সকালে কলাবাগানে অফিসে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হওয়ার পর তিনি আর ফেরেননি বলে তার স্ত্রী জান্নাতুল এশা জানিয়েছেন।

নবীন রোববার বাসায় না ফেরায় পরদিন ভাষানটেক থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়। বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ওই থানার এসআই রুহুল আমিনকে।

পুলিশ ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ওই নামে কেউ আটক থাকার কোনো তথ্য তাদের হাতে নেই। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজ নিয়েও নবীনের কোনো তথ্য পায়নি তার পরিবার।  

এশা মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নবীন সেদিন বেলা ১১টার পর বাসা থেকে বের হন। পরে তার মোবাইল থেকে একটি এসএমএস পান তিনি। সেখানে বলা হয়, মোবাইলে চার্জ শেষ, অফিসে গিয়ে দুপুরে ফোন দেবেন নবীন।

রোববার বেলা ২টার পর নবীনকে ফোন করে বন্ধ পান এশা। পরে অফিসে ফোন করে জানতে পারেন, নবীন অফিসেই যাননি।

এ বিষয়ে কথা বলতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার শেলটেকের প্রধান স্থপতি মমিনুন নেছার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি হাসপাতালে আছেন জানিয়ে লাইন কেটে দেন।

ভাষানটেক থানার এসআই রুহুল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নবীনের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি রহস্যজনক। তার অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মা অসুস্থ এবং একমাত্র সন্তান প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকতেন। অফিসে কম কথা বলতেন।”

তিনি জানান, নবীনের মোবাইলের সর্বশেষ অবস্থান শনাক্ত করা গেছে দারুস সালাম এলাকায়। সেখানে তিনি কেন গিয়েছিলেন, না কি অন্য কেউ তার মোবাইল ব্যবহার করছিল- তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

আবার নবীন বাসা থেকে বের হওয়ার পর কচুক্ষেত এলাকায় একটি ব্যাংকের বুথ থেকে তার কার্ড ব্যবহার করে ২০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে।

নবীন নিজেই টাকা তুলেছিলেন কি না- তা জানতে বুথের সিসি ক্যামেরার ভিডিও সংগ্রহ করা হবে বলে জানান এসআই রুহুল।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নবীনকে কেউ অপহরণ করেছে কি না, তিনি আত্মগোপন করেছেন কিনা, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কোনো বিষয় এর পেছনে আছে কি না- সব সম্ভাবনাই তারা খতিয়ে দেখবেন।

এসব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এশা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নবীনের জীবনযাত্রা ছিল অনেকটাই পরিবারকেন্দ্রিক।

“যতটুকু সময় পেত, পরিবারকেই দিত। সন্তানকে সে খুবই ভালোবাসে। কাউকে কিছু না জানিয়ে অন্য কোথাও থাকার মানুষ সে না।”

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগ থেকে পাস করা নবীনের মধ্যে উগ্রবাদে ঝোঁকার মত কোনো লক্ষণ কখনও দেখেননি বলে এক প্রশ্নের জবাবে জানান তার স্ত্রী।