বৈঠকে কোটা পর্যালোচনা কমিটি

সরকারি চাকরিতে কোটা পর্যালোচনায় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি তাদের প্রথম বৈঠকে বসেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2018, 06:24 AM
Updated : 8 July 2018, 07:14 AM

রোববার সকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষিদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সভাপতিত্বে তার দপ্তরে সভায় কমিটির সদস্যদের সবাই উপস্থিত রয়েছেন।

নতুন করে আন্দোলন দানা বাঁধার প্রেক্ষাপটে সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করতে গত ২ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে সাত সদস্যের এই কমিটি করে সরকার।

এই কমিটিকে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা বা সংস্কার বা বাতিলে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়ে প্রয়োজনে বর্তমান কোটা পদ্ধতি সংস্কার বা বাতিলের যৌক্তিকতাসহ সরকারের কাছে সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি), অর্থ বিভাগ এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিবকে নিয়ে গঠিত এই কমিটিকে ১৫ কর্মদিবস, অর্থাৎ আগামী ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে।

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।

কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার দাবিতে কয়েক মাস আগে জোরাল আন্দোলন গড়ে তোলে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’, যা ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে।

আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল সংসদে বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতিই আর রাখা হবে না।

কোটা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করার কথাও সেদিন তিনি বলেছিলেন, যে কমিটি পরবর্তী সুপারিশ করবে।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে আন্দোলন স্থগিত করলেও কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন আশা করে আসছিল আন্দোলনকারীরা। 

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ‘ঘোষণা’ বাস্তবায়নে কমিটি করার কথা থাকলেও তা কবে হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা দিতে পারছিলেন না শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারা।

গত ৮ মে তৎকালীন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোজাম্মেল হক খান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল বা সংস্কার করতে একটি কমিটি গঠনের রূপরেখা ওই দিন সকালেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছেছে। তারপর ওই কমিটি নিয়ে আর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকও তখন অগ্রগতির কোনো খবর জানাতে পারেননি।

এর মধ্যে ‘সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ফের আন্দোলনে নামলে কয়েক দফা তাদের উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় আন্দোলকারীদের অন্যতম নেতা রাশেদ খানকে।

এর মধ্যেই ২ জুলাই দুপুরে মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল সাংবাদিকদের বলেন, কমিটি গঠনে সময় লাগতে পারে। পরে ওই রাতেই কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন আসে।