দালালকে টাকা দিয়ে কাগজপত্র ছাড়াই যারা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে পুলিশের হাতে ধরা পড়ছেন, তাদের জেলে থাকতে হচ্ছে অনির্দিষ্টকাল। আর তাদের সন্তানদের রাখা হচ্ছে আলাদা আশ্রয়কেন্দ্রে। কাজের আশায় ভারতে গিয়ে বাংলাদেশি মেয়েরা নিজেদের আবিষ্কার করছে যৌনপল্লীতে।মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই চিত্র উঠে এসেছে ভারতের অনলাইন পোর্টাল স্ক্রোল ডট ইন-এ।
অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আটক শিশুদের রাখতে ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা ৮০টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। সংলাপ নামের একটি এনজিও এরকমই একটি আশ্রয়কেন্দ্র চালাচ্ছে, যার নাম স্নেহা।
সেই আশ্রয়কেন্দ্রের ১০ ফুট উঁচু দেয়ালে বড় করে লাল রঙে আঁকা একটি হৃদপিণ্ড। দেয়ালের ওপরে কাঁটাতার। আশপাশে নোঙরা রাস্তা আর ছোট ছোট ঘর; শব্দ বলতে দেয়ালের ওপাশ থেকে আসা মেয়েদের হাসি অথবা বিলাপ।
বৈধ কাগজ ছাড়া সীমান্ত পেরিয়ে আসা কিশোরী বালিকাদের জায়গা হয় এখানে। তাদের মধ্যে বাংলাদেশি মেয়েরাও আছে। যতদিন না দেশে তাদের পরিবারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে, ততদিন তাদের এ আশ্রয়কেন্দ্রেই থাকতে হবে। আর যাদের মা-বাবা ভারতে জেল খাটছেন, তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও জটিল।
ভারতের আইন অনুযায়ী, কোনো বিদেশি নাগরিক পাসপোর্ট-ভিসা বা বৈধ ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট ছাড়া প্রবেশ ও অবস্থান করলে তার দুই থেকে আট বছরের জেল হতে পারে।
এই বিচার শুরুর প্রক্রিয়ার শুরুতে পরিবারের প্রাপ্তবয়স্কদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আর ছয় থেকে ১৮ বছর বয়সীদের শিশু কল্যাণ কমিটি ও কিশোর বিচার বোর্ডের মাধ্যমে পাঠানো হয় আশ্রয়কেন্দ্রে।
মহানির্বাণ কলকাতা রিসার্চ গ্রুপের সুচিত্রা সেনগুপ্ত তিন বছর আগে প্রকাশিত তার এক গবেষণায় এরকম বেশ কিছু ঘটনা তুলে ধরেছেন। সেখানে ভাদুরিবালা নামে চল্লিশোর্ধ এক নারীর কথা এসেছে, যিনি সাত বছর ধরে কারাগারে (বিরামপুর কেন্দ্রীয় সংশোধন কেন্দ্র) বন্দি।
স্ক্রোলের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে এসেছিলেন ভাদুরিবালা। কিন্তু সন্তানদের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়ায় গত চার বছর তিনি তাদের চোখে দেখেননি।
পাসপোর্ট আইনে লঙ্ঘনের অভিযোগে আটক পরিবারগুলোকে এভাবে আলাদা রাখাকে ‘আন্তর্জাতিক কনভেনশনের লঙ্ঘন’ বলছেন ভারতের অধিকারকর্মীরা।
বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব মুখার্জি বলেন, “ভারত জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদে সম্মতি দেওয়া দেশ। ওই সনদ অনুযায়ী পরিবারকে আলাদা করা যাবে না। অথচ এখানে তাই করা হচ্ছে।”
বিপ্লবদের সংগঠন অধিকারবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করে। সীমান্ত-সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদেরও তারা সহায়তা দিচ্ছে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার অবশ্য বলছে, তারা সতর্কতার সঙ্গেই কাজটি করছে।
পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপারসন অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের জেল যথেষ্ট মানবিক। আমি এমন ঘটনাও দেখেছি যেখানে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় শিশুকে মায়ের সঙ্গে থাকতে দিয়েছিল কারাগার কর্তৃপক্ষ, কারণ ওই শিশু মা থেকে আলাদা হতে চায়নি।”
আশ্রয়কেন্দ্র স্নেহার কর্তৃপক্ষও একই ধরনের দাবি করেছেন। সেখানে মেয়েশিশুদের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা মমতা চক্রবর্তী বলেন, শিশুদের তারা কারাগারে নিয়ে যান বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে। কখনো কখনো অভিভাবকদের আগে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হলে তারা যথাযথ কাগজসহ পরে বাচ্চাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন।
সীমান্ত পার হওয়ার পর সন্তানরা কীভাবে পরিবার থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছে, সেই গল্প স্ক্রোলকে শুনিয়েছেন মহিদুল ইসলাম নামের এক এনজিওকর্মী। সীমান্তে আটক হওয়া বিদেশিদের আইনি সহায়তা দেন দিন।
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, দুই বছর আগের এক ঘটনায় ২০ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশ হয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করতে গিয়ে সীমান্তে আটক হন। তাদেরেই একটি পরিবারে মাকে আইন অনুযায়ী দমদম জেলে পাঠানো হয়। আর তার ছেলে ও মেয়েকে পাঠানো হয় আশ্রয়কেন্দ্রে।
আলাদা করার পর, অভিভাবক ও শিশুদের বিচার শুরু হয় আলাদাভাবে। মায়ের শুনানি এবং সন্তানের শুনানি হতে থাকে ভিন্ন ভিন্ন তারিখে। কিছুদিন পরে মহিদুল জানতে পারেন, ওই নারীর দুই সন্তান মারা গেছে।
“সাধারণত বাবা-মায়ের পুনর্বাসনই আগে করা হয়। কিছুদিন আগেও এদের ফেরত পাঠানো হত ‘পুশব্যাকের’ মাধ্যমে। আক্ষরিক অর্থেই তাদের সীমান্তে নিয়ে নিজের দেশে ঠেলে দেওয়া হত। অথচ তাদের সন্তানরা তখনও আশ্রয়কেন্দ্রেই পড়ে আছে।”
মানবপাচারকারীরা অনেক সময় এই সুযোগ নেয় জানিয়ে মহিদুল বলেন, “তারা আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে নিজেদেরকে অভিভাবক হিসেবে পরিচয় দিয়ে মেয়ে শিশুদের নিয়ে চলে যায়। এরকম বেশ কিছু ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয়কেন্দ্রের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।”
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চার হাজার ৯৭ কিলোমিটার সীমান্তে রয়েছে কাঁটাতারের বেড়া; এর দুই হাজার ২১৭ কিলোমিটার সীমান্ত পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে। ভারতের জাতীয় ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গেই দেশটির সবচেয়ে বেশি বিদেশি বন্দি ছিল।
আর পশ্চিমবঙ্গ কারেকশন সার্ভিস বলছে, ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল পর্যন্ত ৯ হাজার ৬৪৭ জন প্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশি এবং ১৪২টি শিশু আটক ছিল ভারতের বিভিন্ন কারাগার ও আশ্রয়কেন্দ্রে।
এই অবৈধ অভিবাসীরা নানা রকম পরিস্থিতির শিকার হয়ে এই দুর্দশার মধ্যে পড়েছেন। কোনো কোনো পরিবার সীমান্ত পেরিয়ে এসেছে ভারতে তাদের আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করার জন্য। কেউ বলেছেন, তারা চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন।
কেউ আবার দালালদের চক্করে বিভ্রান্ত হয়ে বৈধ কাগজ ছাড়াই ভারতে ঢুকে পড়ে এখন হাজতে দিন কাটাচ্ছেন। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ধর্মীয় হয়রানির শিকার হয়ে ভারতে পালিয়ে আসার কথাও বলেছেন অনেকে।
সুচিত্রা সেনগুপ্ত তার প্রতিবেদনে এমন একজন ক্যান্সার রোগীর দেখা পাওয়ার কথা বলেছেন, যিনি অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এখন দমদম জেলে রয়েছেন।
“চিকিৎসার রিপোর্ট ও কেস হিস্ট্রিতে তার কথার সত্যতা পাওয়া যায়। কারা কর্তৃপক্ষ তাকে ছাড়িয়ে নিতে আমাদের অনুরোধ করে। কারণ এই পরিস্থিতিতে তার আইনজীবীও কিছু করতে পারছিলেন না।”
অনেক ঘটনায় মেয়েদের ভালো বেতনে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করে আনে দালালরা। সেই মেয়েদের অধিকাংশের জায়গা হয় বেঙ্গালুরুর যৌনপল্লীতে।
আশ্রয়কেন্দ্র স্নেহায় বাংলাদেশি মেয়েদের নিয়ে কাজ করছেন সুমি ভৌমিক। তিনি জানান, ভুক্তভোগীদের অধিকাংশই দরিদ্র আর সুবিধাবঞ্চিত।
“দারিদ্রের কারণে তারা প্রথমে ঢাকার পোশাক কারখানায় কাজ খোঁজেন। দালালরা সেখানে তাদের ফাঁদে ফেলে পাচার করে নিয়ে আসে।… মেয়েরা এমনকি বুঝতেও পারে না তারা আসলে কোথায় যাচ্ছে। এরা ১৩ থেকে ১৫ বছরের কিশোরী।”
সুমি ভৌমিক বলেন, যখন সীমান্তরক্ষীরা তাদের সঙ্গে হিন্দিতে কথা বলে তখনই এই মেয়েরা বুঝতে পারে যে তাদের ভারতে নিয়ে আসা হয়েছে।
স্ক্রোলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১২ সালের মে মাসে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক মেমোরেন্ডামে মানবপাচারের ভুক্তভোগীদের ক্ষেত্রে ভিন্ন ব্যবস্থা করতে বলা হয়। সেখানে বলা হয়, নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর আগে পরিবারের বয়স্ক ও শিশুদের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠাতে হবে।
তবে ওই নির্দেশনা বরাবরই এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিপ্লব মুখার্জি। তিনি জানান, তার প্রতিষ্ঠান ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে গত তিন বছরে বহুবার লিখিত অভিযোগ করেছে। এমন অন্তত দুইশ ঘটনা তারা দেখিয়েছেন, যেখানে বাংলাদেশি নাগরিকদের ফরেনার্স অ্যাক্টের আওতায় ভুলভাবে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
২০১৬ সালের নভেম্বর মাসের এক ঘটনায় তিন সন্তানসহ তিন বাংলাদেশি নারী আটক হয়ে জেলে যান। তাদের সন্তানদের বয়স ছিল আট, দুই ও দুই বছর। তাদের বিরুদ্ধেও ফরেনার্স অ্যাক্টের আওতায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।
বিপ্লবের প্রতিষ্ঠানের একটি অনুসন্ধানী দল জানতে পারে, ওই দরিদ্র নারীরা দালালদের মাধ্যমে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছিলেন কাজের খোঁজে। একই বছর মানবাধিকার কমিশনে পাঠানো চিঠিতে তারা আরেকটি ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন, যেখানে ১৩ জন নারীর মধ্যে ছয়জন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও এই আইনে ফেলে তাদের জেলে পাঠানো হয়। আদালতে উপস্থাপনের আগে এদের আসল বয়স লুকিয়েছিল পুলিশ।
২০১৪ সালের মে মাসে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত পাঠাতে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে। এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে ভুক্তভোগীদের পরিচয় ও ঠিকানা নিশ্চিত করা জরুরি ছিল। সেজন্য ভারতের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে, যাতে বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশন বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ও ঠিকানা নিশ্চিত করতে পারে। ঠিকঠাক শনাক্ত করা গেলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ২১ সপ্তাহ লাগার কথা।
আশ্রয়কেন্দ্র স্নেহার কর্মী গীতা ব্যানার্জি বলেন, “আগে পুশব্যাকই ছিল অনানুষ্ঠানিক নিয়ম। এখন শিশুদের পুশব্যাক করা হয় না, কারণ অনেক ক্ষেত্রে সীমান্তরক্ষীরা অনধিকার প্রবেশ ভেবে গুলি করে। কখনও কখনও শিশুরা ধর্ষণের শিকারও হয়।”
আবার বৈধ পথে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রেও অনেক বিপত্তি আছে। কারও নাগরিকত্ব নিশ্চিত করা না গেলে তার ক্ষেত্রে করার কিছু থাকে না। আবার পরিবার নেবে না ভেবে পাচার হয়ে আসা অনেক নারী ভুল ঠিকানা দেন। এ কারণেও তাদের পরিচয় নিশ্চিত করার কাজটি বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের জন্য কঠিন হয়ে ওঠে।
সুমি ভৌমিক বলেন, “দীর্ঘদিন যৌনপল্লীতে থাকার ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কারণে অনেক মেয়ে আর কিছুই মনে করতে পারে না। এমনকি নিজের নামও তারা ঠিকমত বলতে চায় না।”
মানবপাচারের শিকার এক মেয়েকে পাঁচ বছর আগে মুম্বাই থেকে উদ্ধার করে স্নেহাতে আনা হয়। এখন তার বয়স ১৮ বছর। গত জুন পর্যন্ত মেয়েটি সঠিক নাম আর ঠিকানা না বলায় বাংলাদেশে তার পরিবারকে শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। পরে মেয়েটি আরেকটি নাম ও ঠিকানা জানালে সেই বাসা খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়। তবে সেখান থেকে তার পরিবার অন্য কোথাও চলে গিয়েছিল।
নাম গোপন রাখার কারণ হিসেবে মেয়েটি বলেছিল, যখন তাকে স্নেহাতে আনা হয়, তার নামে অন্য আরেকজনের নাম সে দেখেছিল নিবন্ধন খাতায়।
আতঙ্ক আর ভাষাগত সমস্যার কারণে তথ্য বিভ্রাটেও অনেক বাংলাদেশিকে জেলে যেতে হয় বলে জানান মহিদুল ইসলাম, যিনি আটটি এনজিওর একটি মোর্চার হয়ে কাজ করেন।
পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার স্বরূপনগর এলাকায় তিনি থাকেন; ওই এলাকাটি অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারের জন্য বহুল ব্যবহৃত। সীমান্তে আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ১৬টি ব্লকে কাজ করছে এনজিওগুলো।
ভারতে আইনি প্রক্রিয়া শেষে কোনো বাংলাদেশি শিশুকে দেশে ফেরত পাঠানোর সময় টাস্কফোর্স মনোনীত একটি এনজিও সংস্থার কর্মীদের সেখানে উপস্থিত রাখা হয়। গত কয়েকবছরে মহিদুলের এনজিও মোর্চা এরকম বহু ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হয়েছে।
মহিদুল বলেন, “যখন বিএসএফ মেয়েদের আটক করে, আমরা তাদের কাউন্সেলিং করি। অধিকাংশ মেয়েই বয়সে তরুণী, দরিদ্র এবং অশিক্ষিত… তারা শুরুতে কথা বলতে অনিচ্ছুক থাকে, তবে যখন আমরা বাংলায় কথা বলি, তখন তারা স্বচ্ছন্দবোধ করে।
“আমরা বিএসএফকে ব্যাখ্যা করি যে এই মেয়েরা নিজেরা আসেনি, তাদেরকে চালাকি করে নিয়ে আসা হয়েছে। এরপর বিএসএফ সিদ্ধান্ত নেয় তাদের ফেরত পাঠাবে নাকি থানায় নিয়ে যাবে। তবে বিএসএফ শিশুদের দ্রুত ফেরত পাঠিয়ে দেয়।”
বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের অভিযোগ নিয়ে সুচিত্রা সেনগুপ্তর একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশি শিশুদের প্রায়ই বয়স্ক দেখিয়ে জেলে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, মেয়েরা অনেক সময় মিথ্যা তথ্য দেয়, কারণ দালালরা তাদের আগেই বলে রেখেছে, বয়স ১৮ বললে ভারতে কাজ পেতে সুবিধা হবে।
আবার কখনো কখনো মেয়েশিশুদের বয়স বাড়িয়ে দেখানো হয় এই কারণে যে তাতে মা ও শিশুকে একসঙ্গে আশ্রয়কেন্দ্রে অথবা জেলে রাখা যাবে, যেন তারা আলাদা না হয়।