মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটিতে সদস্য রাখা হয়েছে মোট সাতজন শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাকে।
কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপনের কথা জানিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মমিনুল হক সোমবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
“বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা বা সংস্কার বা বাতিল করতে এই কমিটি করা হয়েছে,” বলেন তিনি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি), অর্থ বিভাগ এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিবদের কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলে সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ঘোষণার’ ২ মাস ২২ দিন পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই কমিটি করল।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।
কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার দাবিতে কয়েক মাস আগে জোরাল আন্দোলন গড়ে তোলে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’, যা ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে।
আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল সংসদে বলেছিলেন, কোটা পদ্ধতিই থাকবে না, এটা ‘বাতিল’।
একইসঙ্গে ওই দিনই কোটা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করার কথাও বলেছিলেন, যে কমিটি পরবর্তী সুপারিশ করবে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে আন্দোলন স্থগিত করলেও কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন আশা করে আসছিল আন্দোলনকারীরা।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ‘ঘোষণা’ বাস্তবায়নে কমিটি করার কথা থাকলেও তা কবে হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা দিতে পারছিলেন না শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারা।
গত ৮ মে তৎকালীন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোজাম্মেল হক খান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল বা সংস্কার করতে একটি কমিটি গঠনের রূপরেখা ওই দিন সকালেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছেছে। তারপর ওই কমিটি নিয়ে আর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক রোববারও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিজ্ঞাসায় অগ্রগতির কোনো খবর জানাতে পারেননি।
এর মধ্যে ‘সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ফের আন্দোলনে নামলে কয়েক দফা তাদের উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় আন্দোলকারীদের অন্যতম নেতা রাশেদ খানকে।
এই প্রেক্ষাপটে সোমবার দুপুরে মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল সাংবাদিকদের বলেন, কমিটি গঠনে সময় লাগতে পারে।
পরে রাতেই কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন আসে।