শংকরের বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা পিবিআইকে পুনঃতদন্তের নির্দেশ

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীক মারধরের অভিযোগে আইন ও বিচার বিভাগের সাময়িক বরখাস্তকৃত ব্যক্তিগত কর্মকর্তা শংকর দত্তের বিরুদ্ধে মামলা পুনরায় তদন্তের জন্য পুলিশের ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) পাঠিয়েছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 June 2018, 08:30 PM
Updated : 20 June 2018, 06:00 AM

ঢাকার একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের একজন বিচারক গত বৃহস্পতিবার এ আদেশ দিলেও বিষয়টি জানা যায় মঙ্গলবার।

শংকরের স্ত্রী আইনজীবী, সহকারী গভর্নমেন্ট প্লিডার ও হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক কাকলী মৃধার দায়ের করা এই মামলায় অভিযোগের সত্যতা নেই কারণ দেখিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন পুলিশের তেজগাঁও নারী সহায়তা তদন্ত বিভাগের উপ-পরিদর্শক রেহানা সুলতানা।

আসামির কাছ থেকে ‘উৎকোচ নিয়ে তার পক্ষে প্রকৃত সত্য গোপনের’ মাধ্যমে ওই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে অভিযোগ করে বাদিনী কাকলী ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বৃহস্পতিবার না-রাজী আবেদন করেছিলেন।

বিচারক মোসাম্মৎ শামসুন্নাহার ওই আবেদনে সায় দিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিআইবির প্রধান কার্যালয়ের উপ-মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেন।

বাদিনী না-রাজী আবেদনে বলেন, তিনি ট্রাইব্যুনালে যৌতুকের দাবিতে মারধরের অভিযোগ আনলে বিচারক ঘটনাটি এজহার হিসাবে নেওয়ার জন্য গত বছরের ১৬ অগাস্ট মতিঝিল থানাকে নির্দেশ দেন।

“২০০০ সালের ১৫ ডিসেম্বর আসামি শঙ্করের সঙ্গে বাদিনীর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বাদিনীর সুখের কথা চিন্তা করে তার বাবা তাকে ২১ ভরি সোনা এবং গোপালগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে ১ একর ৪১ শতাংশ জমি তাকে কিনে দেন।

“পরে তাদের ঘরে একটি পুত্র ও একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। এরপর থেকে আসামি বাদিনীকে যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। শিশু সন্তানদের কথা চিন্তা করে বাদিনী মুখ বুজে এসব সহ্য করে স্বামীর সংসার করতে থাকেন। এরপর আসামির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ২০১৫ সালে বাদিনী তার বাবার দেওয়া ১ একর ৪১ শতাংশ জমি আসামির নামে লিখে দিতে বাধ্য হন।

“কিন্তু কিছুদিন চুপচাপ থাকার পর আসামি তাকে আবারও নির্যাতন শুরু করেন।”

এরপর বাদিনী মতিঝিলের ১০ নম্বর কমলাপুরে ভাড়া বাসায় ওঠেন। সেখানে এসে তার স্বামী শঙ্কর গত বছরের ১৩ অগাস্টে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

“অপরগতা জানালে তাকে শঙ্কর কিল-ঘুষি মেরে মেঝেতে ফেলে দেন। এ সময় ওই বাড়ির ভাড়াটিয়াসহ অন্যরা এগিয়ে আসলে শঙ্কর  হুমকি দিয়ে চলে যান।”

পরে বাদিনী কাকলী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এরমধ্যে বাদিনীর বিনা অনুমতিতে আসামি শঙ্কর আরেকটি মেয়েকে বিয়ে করেন, যার বয়স ১৪ বছর বলে কাকলীর দাবি।

বিষয়টি নিয়ে শঙ্কর দত্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্বিতীয় বিয়ের কথা স্বীকার করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার দ্বিতীয় স্ত্রী নাবালিকা নন। কাকলীর সঙ্গে অন্য একজনের সম্পর্ক  রয়েছে। তার সঙ্গে আমার আরও মামলা রয়েছে।

“এর আগে আমি কতগুলো মামলায় রায় পাই। মামলাগুলোতে হেরে গিয়ে সে আমার বিরুদ্ধে নতুন মামলা সাজায়। যে মামলায় পুলিশ আদালতে অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।”