রোববার সকালে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনের কাউন্টারগুলোর সামনে গিয়ে টিকেট প্রত্যাশীদের ভিড় দেখা যায়।
রাজশাহীগামী ট্রেনের টিকেটের জন্য লাইনে দাঁড়ানো রাজিব হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভাইয়েরা মিলে রাজশাহী বেড়াতে যাচ্ছেন।
“যে ট্রেনের টিকেটই পাই না কেন নিয়ে চলে যাব।”
ঈদের আগে ট্রেনের টিকেট পাননি বলে বাড়ি যেতে পারেননি খুলনার আসাদুল হক, সেজন্য ঈদের পর ছুটি নিয়েছেন।
তিনি বলেন, “ঈদের আগে যে পরিমাণ ভিড় ছিল বলার মতো না। একদিন এসেছিলামও টিকেটের জন্য। কিন্তু না পেয়ে চলে গিয়েছিলাম। পরে ভাবলাম ঈদের পরেই যাই, ঝামেলা কম হবে। এজন্য আজ আবার আসলাম।”
তবে ঈদের পরদিন ঢাকায় ফেরা ট্রেনের সংখ্যা কম। যেসব ট্রেন এসেছে সেগুলোয় ভিড় ছিল স্বাভাবিক।
দেওয়ানগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা ভাওয়াল এক্সপ্রেস ট্রেনে ময়মনসিংহ থেকে এসেছেন আবু হানিফ। তিনি বলেন, অনেক আরামেই এসেছেন তিনি।
নিয়মিত যেসব ট্রেন ঢাকায় আসে তার বেশিরভাগই ঈদের পরদিন বন্ধ থাকে। এ কারণে ঢাকায় ট্রেনও কম এসেছে বলে জানান কমলাপুরের স্টেশনের ব্যবস্থাপক সিতাংশু চক্রবর্ত্তী।
তিনি জানান, রোববার সারাদিনে ৩৫টা ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। সকাল থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত ১৭টি ট্রেন কমলাপুর ছেড়েছে। আর ঢাকায় বিভিন্ন স্টেশন থেকে কমলাপুর স্টেশনে ২৫টি ট্রেন আসার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, রোববার ঢাকায় ফেরা ট্রেনে ভিড় কম ছিল। ঢাকা ছেড়ে যাওয়া সবগুলো ট্রেনে বেশ ভালো ভিড় ছিল। অনেকে ঈদের আগে যেতে পারেননি তারা যাচ্ছেন। আবার অনেকে বিভিন্ন গন্তব্যে বেড়াতে যাচ্ছেন।
“তবে ঈদের পরদিন অনেকগুলো আন্তঃনগর ট্রেন বন্ধ থাকে। সে কারণে আজ ট্রেন কম। যেসব ট্রেন এসেছে যেগুলোতেও ভিড় কম। আর ঢাকামুখী ট্রেনগুলোয় কাল থেকে যাত্রীদের ভিড় শুরু হবে।”
সড়কপথেও ঢাকায় ফেরা মানুষের ভিড় কম দেখা গেছে। দুপুরের সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে গিয়ে ঢাকামুখী মানুষের ভিড় তেমন একটা দেখা যায়নি। বাসও আসছে অন্যদিনের তুলনায় কম।
সিলেট থেকে ছেড়ে আসা হানিফ পরিবহনের একটি বাসে মাত্র আটজন যাত্রী ছিল বলে জানান সে বাসের হেলপার আসলাম।
“আমাদের গাড়ি সকাল ৯টায় সিলেট থেকে ছাড়ে। সে সময় বাসে মাত্র আটজন প্যাসেঞ্জার ছিল। আজ বিকাল থেকে ভিড় হতে পারে।”
“আমরা সকালে রওনা দিয়েছি। কিন্তু গাড়ি মোটামুটি ফাঁকাই ছিল। এক টানে চলে আসছি।”
ঈদের আগে গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা গিয়েছিলেন আর্মি গলফ ক্লাবের কর্মী সাকিবুল হাসান। কুমিল্লা থেকে আসতেও তার তেমন কোনো ঝামেলা হয়নি বলে জানান তিনি।
“বাড়িতে বেশি ভালো লাগল না। বন্ধুরা বেশিরভাগই বাড়ির বাইরে চলে গেছে। এজন্য আইসা পড়ছি। রাস্তা এক্কেবারেই ফাঁকা।”
সড়কপথে সোমবার থেকে মোটামুটি ভিড় হবে বলে জানান সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম।
“আজ যেসব বাস এসেছে সেগুলো বেশিরভাগই ফাঁকা। আশা করছি আগামীকাল থেকে ঢাকার দিকে মানুষ ফিরতে শুরু করবে।”