মুসলমানদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব শনিবার উদযাপিত হচ্ছে সারা দেশজুড়ে। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকা থেকে গ্রামে ফিরে গেছেন লাখ লাখ মানুষ।
সারা দেশের প্রায় সব মুসলিম পরিবারেই ঈদ উপলক্ষে হয়েছে বাড়তি কেনাকাটা। সামর্থ্য অনুযায়ী স্বজনদের জন্য নতুন পোশাক কেনার পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে বিশেষ খাবারের প্রস্তুতি।
সকালে ঈদের জামাত দিয়ে শুরু হয় এই আনন্দ উৎসব। ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রধান ঈদ জামাতে দেশ ও মানুষের কল্যাণ কামনা করা হয়।
সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে এই জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এই ঈদ জামাতে অংশ নেন।
ঈদ আনন্দে হিংসা-বিদ্বেষ ঘুচে দেশবাসীর মৈত্রী বন্ধনে এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে উঠবে বলে প্রত্যাশা করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেছেন, “মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা ও সংযম পালনের পর অপার খুশি আর আনন্দের বারতা নিয়ে আমাদের মাঝে আসে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। দিনটি আনন্দের, খুশির। ঈদ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে গড়ে তোলে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধন।”
ইসলামকে শান্তি ও কল্যাণের ধর্ম অভিহিত করে তিনি বলেন, “এখানে হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, কূপমণ্ডুকতার কোনো স্থান নেই। মানবিক মূল্যবোধ, পারস্পরিক সহাবস্থান, পরমতসহিষ্ণুতা ও সাম্যসহ বিশ্বজনীন কল্যাণকে ইসলাম ধারণ করে। ইসলামের এই সুমহান বার্তা ও আদর্শ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।
ঈদ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “ঈদ শান্তি, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের অনুপম শিক্ষা দেয়। হিংসা ও হানাহানি ভুলে মানুষ সাম্য, মৈত্রী ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ঈদ ধনী গরিব নির্বিশেষে সকলের জীবনে আনন্দের বার্তা বয়ে নিয়ে আসে।
“ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে মুসলমানদের আত্মশুদ্ধি, সংযম, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মেলবন্ধন পরিব্যাপ্তি লাভ করুক- এটাই হোক ঈদ উৎসবের ঐকান্তিক কামনা।”
ঈদের প্রধান জামাতের পর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সকাল ১০টায় বঙ্গভবনে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। সেখানে মন্ত্রিপরিষদ ও সংসদ সদস্য ছাড়াও রাজনৈতিক নেতা, কূটনীতিক, পেশাজীবী, সাংবাদিক, ধর্মীয় নেতারা অংশ নেবেন।
ঈদ উপলক্ষে শনিবার দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল, কারাগার, শিশু পরিবার, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, সেইফ হোম, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।
বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশনগুলো ঈদের আগে-পরে কয়েক দিন ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে।
ঈদ ঘিরে জাতীয় পর্যায়ের সঙ্গে সমন্বয় রেখে স্থানীয়ভাবেও সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দেশব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।