জাতিসংঘ সংস্থাটি বলছে, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর শিশুরা ব্যাপকভাবে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার ইউনিসেফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক ভারি বর্ষণে বন্যা ও পাহাড় ধসের ঘটনায় এক রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র। এতে শরণার্থী পরিবারগুলোর সুরক্ষা ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বেগবেদার বলেন, “হাজার হাজার শরণার্থী শিশু ও পরিবারগুলো পাহাড়ি আশ্রয়কেন্দ্রে বাস করছে, যেখানে বালুমাটি আটকে রাখার মতো কোনো গাছ, পাথর বা ঝোঁপ নেই। যেহেতু বৃষ্টি হয়েই চলেছে এবং পানির উচ্চতা বাড়ছে এখানকার মাটি এখন কাদায় পরিণত হয়েছে।
“শরণার্থীদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়াটা এখনই গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেক পরিবার, যারা গত কয়েক মাস ধরে বিপর্যয়ের মুখোমুখি, তারা নিজেদের বাসস্থান ছেড়ে যেতে অনিচ্ছুক।”
সাম্প্রতিক বৃষ্টির পর ইউনিসেফের তাৎক্ষণিক জরিপে দেখা যায়, ঝড়ো হাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে ক্যাম্পের বাসিন্দাদের ৬৫ শতাংশেরও বেশি। প্রতি চারজনে একজনেরও বেশি পাহাড় ধসের মুখে পড়ছে। এদের ৪ শতাংশ বন্যা দুর্গত।
এছাড়াও প্রায় ৯০০টি আশ্রয়কেন্দ্র, ১৫টি পানি সংগ্রহ কেন্দ্র এবং ২০০টি শৌচাগারসহ ইউনিসেফের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার দুটি কেন্দ্র, দুটি খাবার বিতরণকেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে থেকে জানানো হয়, ক্যাম্পে চলাচলের অধিকাংশ রাস্তাই বন্যার পানিতে প্লাবিত। অন্যদিকে গুরুত্ব একটি সড়ক ওষুধ বহনকারী গাড়ি ছাড়া সাধারণের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।
ইউনিসেফ ও এর সহযোগী সংস্থাগুলো পরিচালিত বেশ কয়েকটি শিক্ষাকেন্দ্র এবং শিশু ও নারীদের বিনোদনের জন্য নির্ধারিত স্থানগুলো খারাপ আবহওয়ার কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখায় এতে নারী ও শিশুরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
মৌসুমী বৃষ্টির কারণে ক্যাম্পে বিশেষত ডায়রিয়া ও কলেরার মতো পানিবাহিত রোগসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও দেখা দিয়েছে।
বেগবেদার বলেন, “প্রবল বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধস ও বন্যায় শিশুরা কেবল আহতই হচ্ছে না, মৃত্যুও ঘটছে। এছাড়াও রোগ দেখা দিচ্ছে, সেই সঙ্গে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় ব্যাঘাত ঘটছে।
“আরও বিপর্যয় এড়াতে এই হাজার হাজার শিশুদের জন্য জরুরি সহায়তা প্রয়োজন।”
মৌসুমী বৃষ্টি ও বর্ষায় জুন, জুলাই ও অগাস্ট মাসে কক্সবাজারে আড়াই মিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এ কারণে কয়েক মাস ধরে ইউনিসেফ ও এর সহযোগী সংস্থাগুলো টানা বৃষ্টিপাতের ক্ষতি মোকাবেলায় কাজ করছে।
প্রয়োজনে শরণার্থীরা যেন সহজেই তাদের থাকার ঘরটি স্থানান্তর করতে পারে সেজন্য লোহার বিশেষ প্যানেল ও ত্রিপলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে ইউনিসেফ জানিয়েছে।