বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে দেওয়া বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, “সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বেসরকারি পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত সকল কর্মজীবী মানুষের জন্য একটি টেকসই সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের কাজ এ অর্থবছরেই শুরু করার আশা রাখি।”
দেশের মোট বয়স্ক জনসংখ্যার মধ্যে পেনশনভোগীর সংখ্যা ‘অতি সামান্য’ মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, শুধু সরকারি কর্মচারী এবং কিছু বেসরকারি সংস্থার ৭ থেকে ৮ লাখ পরিবার বর্তমানে নিয়মিত পেনশন পেয়ে থাকেন।
“অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের বাইরে হতদরিদ্র ৩৫ লাখ লোক মাসিক ৪০০ টাকা হারে বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন, যা মোট বয়স্ক জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ। তাদের ভাতার পরিমাণও মানসম্মত জীবনধারণের পক্ষে যথেষ্ট নয়।”
সরকার অর্থনেতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সবার কাছে পৌঁছাতে চায় এবং বৈষম্য কমিয়ে আনতে চায় জানিয়ে মুহিত বলেন, বিদ্যমান সরকারি পেনশন কার্যক্রমের বাইরে বেসরকারি পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত সকল কর্মজীবী মানুষ এই ‘সার্বজনীন পেনশন’ ব্যবস্থার আওতা থাকবে।
হতদরিদ্র শ্রমজীবীদের ক্ষেত্রে তাদের অংশের অর্থও সরকার ওই হিসাবে জমা করবে। এ তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ করে প্রাপ্ত আয় সার্বজনীন পেনশন তহবিলে জমা হতে থাকবে। পুঞ্জিভূত চাঁদা ও আয়ের পরিমাণের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অবসরকালে মাসিক পেনশন পাবেন।
সার্বজনীন এই পেনশন প্রবর্তনের জন্য কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন হবে জানিয়ে মুহিত বলেন, সেজন্য সময় লাগবে।
পেনশন ব্যবস্থাপনা, পেনশন প্রদান প্রক্রিয়া ও পেনশনের আওতার ক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে বেশ কিছু সংস্কার এনেছে বলে বাজেট বক্তৃতায় জানান অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, অবসরে যাওয়ার পর সরকারি কর্মচারীদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন আয় প্রবাহ নিশ্চিত করতে পেনশনের সব অর্থ একবারে তুলে নেওয়ার সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে এ আয়কে মূল্যস্ফীতির প্রভাবমুক্ত রাখার জন্য পেনশনের ক্ষেত্রেও ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।
শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর মৃত্যুর পর তাদের বিধবা স্ত্রী ও প্রতিবন্ধী সন্তানকেও আজীবন এবং বিপত্নীক স্বামীকে সর্বাধিক ১৫ বছর মাসিক চিকিৎসা ভাতা ও বছরে দুটি উৎসব ভাতা দেওয়ার নিয়ম চালু হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।