নির্ধারিত সময়ে নিবন্ধন আবেদন করতে ব্যর্থ হওয়ায় পর্যবেক্ষকের তালিকায় নাম ওঠেনি দুই-তিন দশক ধরে মাঠে থাকা এ দুটি সংস্থা।
তবে ১৯৯টি আবেদন পর্যালোচনা করে নাম সর্বস্ব ৮০টি সংস্থাকে বাদ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ১১৯টি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে এ বছরের জুন থেকে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য নিবন্ধন দিয়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।
বুধবার ইসির যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ১১৯টি পর্যবেক্ষক সংস্থার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
নিবন্ধন না পাওয়ায় ‘বিস্মিত’ ফেমা ও ব্রতীর প্রধান। তারা জানান, নজরে না আসায় নির্ধারিত সময়ে আবেদন করতে না পারলেও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের আশ্বাসে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।
পুরনো এ দুটি সংস্থাকে বাদ রেখে কী করে পর্যবেক্ষক তালিকা চূড়ান্ত করল ইসি- এমন প্রশ্নও উঠেছে।
নির্বাচন ভবন
পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন কাজ দেখভালের দায়িত্বে থাকা ইসি জনসংযোগ পরিচালক আসাদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়ে ন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কমিশনের অনুমোদনে আগামী ৫ বছরের জন্য এসব সংস্থা নিবন্ধিত হল।
তিনি বলেন, “নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যারা আবেদন করেছিল; তাদের মধ্য থেকেই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের পরে যেসব আবেদন এসেছিল, তা আমলে নেয়নি ইসি।”
ফেমা ও ব্রতী যথাসময়ে নিবন্ধন আবেদন করতে না পারায় এবার ইসির পর্যবেক্ষক সংস্থায় তালিকাভুক্ত হয়নি বলে জানান এ কর্মকর্তা।
নিবন্ধন না দেওয়ায় বিস্মিত ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুর্শিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার অফিস ইসির বিজ্ঞপ্তিটি খেয়াল করেনি; একটু দেরি হয়ে গেল তাই। সিইসির আশ্বাসে পরে সব কিছু মেনে কাগজপত্রসহ আবেদন জমা দিয়েছিG”
“আমি অবাক হয়েছি; কী করে ব্রতীকে বাদ দেওয়া হল!”
১৯৯৬ সালের পর থেকে নির্বাচনপূর্ব জরিপ কার্যক্রমে কাজ করে আসছে ব্রতী।
ফেমাকে দেশের সব থেকে পুরনো পর্যবেক্ষক সংস্থা বলে দাবি করলেন সংস্থার সভাপতি মুনিরা খান। ১৯৮৫-৮৬ সাল থেকে নিয়মিত সব ধরনের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ছিলেন তারা।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ইসির বিজ্ঞপ্তিটি খেয়াল করিনি; তাই নির্ধারিত সময়ে নিবন্ধন আবেদন করতে পারিনি। সিইসি ও একজন নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে আমি কথা বলেছি; তারাও আশ্বস্ত করেছেন আমাকে। পরে আবেদন পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে আবেদন জমা দিয়েছি।
“এরপরও আমাদের নিবন্ধন না দেওয়া বিস্ময়কর! আমাদেরকে নিবন্ধন দিল না?”
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন চালু হয়। ২০০৮ সালে ১৩৮টি সংস্থাকে নিবন্ধন দেয় তৎকালীন ইসি। তখন নিবন্ধনের মেয়াদ ছিল একবছর। পরে এ মেয়াদ পাঁচ বছর করে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।
২০১১ সালে ১২০টি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দেওয়া হয়। এসব সংস্থার নিবন্ধনের মেয়াদ ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে শেষ হওয়ার পর কমিশন তা আরও একবছর বাড়ায়।
নতুন যে ১১৯টি সংস্থা নিবন্ধন পেল। এরমধ্যে গতবারের অনেকেই নেই। নামসর্বস্ব কিছু সংস্থা বাদ পড়লে এ তালিকা অর্ধেকের নিচে নেমে আসত বলে ইসির এক কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, “উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সংস্থা ভোট পর্যবেক্ষণে যায় না। নিবন্ধনের আবেদন ৬ মাস ধরে পর্যালোচনা করলেও সে রকম অনেকগুলো তালিকাভুক্ত রয়েছে। কিন্তু ভোটের কাজে থাকা অন্যতম সংস্থাই বাদ পড়ে গেছে।”
জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ (জানিপপ) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাজমুল আহসান ও পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর একটি মোর্চা ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের (ইডব্লিউজি) এর প্রধান আব্দুল আলীম বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের কাজটি যারা করে না, তাদের রাখার কোনো মানে হয় না।
আরও খবর