সম্প্রতি ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে টানা ছয় দিন ধরে জরিপ চালিয়ে গণপরিবহনে নৈরাজ্য ও যাত্রী দুর্ভোগের এই চিত্র তুলে ধরেছে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি।
শনিবার বেসরকারি এই সংস্থার মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, ঢাকার গণপরিবহনের ‘ভাড়া নৈরাজ্য’ পর্যবেক্ষণে পাঁচটি দলে ভাগ হয়ে গত ৬ দিন ধরে শনির আখড়া, গুলিস্তান, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, পোস্তগোলা, শাহবাগ, ফার্মগেইট, মিরপুর-১০, মহাখালী, আগারগাঁও, ধানমন্ডি, বনানী, বারিধারাসহ নগরীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এই জরিপ চালানো হয়।
গণপরিবহন পরিচালনকারী সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএর নির্ধারিত ভাড়ার তালিকায় ‘সিটিং সার্ভিস’ বা যত আসন তত যাত্রী পরিবহনের বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। সেখানে সিটিং সার্ভিসগুলো ভালো সেবার নামে বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণের বেশি ভাড়া আদায় করে চলছে।
জরিপের বরাত দিয়ে বলা হয়, সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা, দুপুর ২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নগরীতে চলাচলকারী বাস-মিনিবাসের প্রায় ৯৬ শতাংশ সিটিং সার্ভিসের নামে দরজা বন্ধ করে যাতায়াত করছে।
“এতে নগরীর মাঝপথের যাত্রী সাধারণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।”
এই সব বাসগুলো সরকার নির্ধারিত ভাড়ার পরিবর্তে কোম্পানি নির্ধারিত অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে।
প্রতিবেদনে যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে বলা হয়, রোজার মাসে ইফতার ও অফিসের সময়ে বাসগুলো তাড়াহুড়া করতে গিয়ে যাত্রীদের চলন্ত অবস্থায় গাড়িতে তোলে এবং গাড়ি থেকে নামায়।
# গণপরিবহনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ৮২ শতাংশ যাত্রী।
# ৯২ শতাংশ যাত্রী প্রতিদিন যাতায়াতে দুর্ভোগের শিকার হওয়ার কথা জানান। ৯৮ শতাংশ যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের শিকার হন।
# চলন্ত বাসে দৌড়ে উঠা নামা করতে বাধ্য হওয়ার কথা জানান ৬২ শতাংশ যাত্রী।
# সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও ২৮ শতাংশ যাত্রী দাঁড়িয়ে যেতে বাধ্য হন।
# হয়রানির শিকার হলেও অভিযোগ কোথায় করতে হয় তা জানেন না ৯৩ শতাংশ যাত্রী।
# ৮৮ শতাংশ যাত্রী মনে করেন, অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না, সে কারণে তারা অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকেন।