শনিবার প্রায় আড়াই ঘণ্টার এই অভিযানে গ্রেপ্তারদের মধ্যে বিহারীদের ওই ক্যাম্পে মাদকব্যবসায়ী হিসেবে তালিকাভুক্ত ৯০ জনের মধ্যে ৩৬ জন রয়েছে বলে র্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে র্যাব সদস্যরা পুরো জেনেভা ক্যাম্প ঘিরে ফেলে। এরপর বিভিন্ন ইউনিটে ভাগ হয়ে ক্যাম্পের ভেতরে ঢুকে সাঁড়াশি অভিযান চালায় তারা।
র্যাব-২ এর অধিনায়ক আনোয়ার উজ জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিঢোর ডটকমকে বলেন, তালিকাভুক্ত ৩৬ জনসহ ১৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।তাদের মধ্যে চারজন নারী রয়েছেন।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে ৭৭ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের সর্বনিম্ন তিন মাসের এবং সবোর্চ্চ দুই বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তা আনোয়ার বলেন, অভিযানে মোট পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়।পরে যাচাই- বাছাই করে প্রায় সাড়ে তিনশ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ৭৬ জনের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে। তাদের রোববার আদালতে পাঠানো হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের কেউ প্রথম শ্রেণির মাদক ব্যবসায়ী নয়। এরা চার-পাঁচ ধাপ নিচের।
আনোয়ার উজ জামান বলেন, অভিযানে ক্যাম্প থেকে ১৩ হাজার ইয়াবা বড়ি এবং ৩০ কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়েছে।এসব মাদক এক সঙ্গে পাওয়া যায়নি। বিছিন্নভাবে পাওয়ার পর তা জড়ো করে গণনা ও ওজন করা হয়।
র্যাব-২ ছাড়াও র্যাবের গোয়েন্দা ইউনিট, ডগ স্কোয়াডসহ র্যাবের বিভিন্ন ইউনিট এই অভিযানে অংশ নেয়।
এই অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে র্যাব-২ এর অধিনায়ক বলেন, “জেনেভা ক্যাম্পকে গুরুত্ব দিয়ে তার আশপাশে নিয়মিত মোবাইল ডিউটি ছাড়াও চেকপোস্ট বসানো হবে। মাদকের সাথে জড়িত কাউকে আমরা ছাড়া দেব না।”
অভিযানের সময় আটক একজন এক মটর মেকানিক পরে ছাড়া পেয়েছেন।
“আমরা কী করব, এদের সাথে প্রশাসনের লোকজন জড়িত, রাজনীতি করেন এমন লোকজন জড়িত। তাদের বিষয়ে কিছু করতে গেলেই হয়রানির শিকার হতে হয়।”
অভিযানের চলাকালে জেনেভা ক্যাম্পে গাজা কিনতে গিয়ে ধরা পড়েছেন বিউটি বিবি জহুরা নামের তেজগাঁওয়ের এক বাসিন্দা।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তেজগাঁও রেলস্টেশনে থাকেন। সেখানে এখন আর গাঁজা পাওয়া যায় না।লোকমুখে শুনে এখানে কিনতে এসেছেন। র্যাবের অভিযানের কথা জানতেন না।
পরে তাকে ধরে মোহাম্মদ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে স্থানীয় লোকজন।
দুই বস্তিতে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ৫২
এদিকে রাতে ঢাকার কমলাপুরের টিটিপাড়া এবং মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ৫২ জনকে গ্রেপ্তার এবং ৩০ হাজার ইয়াবা জব্দ করেছে পুলিশ।
মহাখালীর কড়াইল বস্তি থেকে ৩০ জনকে এবং কমলাপুর টিটিপাড়া বস্তি থেকে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
“তারা কেউ প্রথম শ্রেণির মাদক ব্যবসায়ী নয়। তাদের কেউ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কেউ সরবরাহকারী, কেউবা সেবনকারী,” বলেন পুলিশ কর্মকর্তা ওবায়দুর।
দুই বস্তিতে ৩০ হাজার ইয়াবা, এক মণ গাঁজা এবং বিপুল পরিমাণ বাংলা মদ পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।