বাংলাদেশের কাছে বিশ্বের শেখার আছে: প্রিয়াঙ্কা

মিয়ানমারে নৃশংসতার শিকার হয়ে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ যেভাবে আশ্রয় দিয়েছে, তাকে ‘বিশ্বের জন্য অনুসরণীয়’ বলেছেন ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2018, 01:14 PM
Updated : 24 May 2018, 02:38 PM

বাংলাদেশ সফর শেষে ফেরার আগে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এ মন্তব্য করেন বলিউড ও হলিউডের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।

জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে চারদিনের সফরে সোমবার বাংলাদেশে আসেন প্রিয়াঙ্কা।

উখিয়া ও টেকনাফে ১০টি শরণার্থী ক্যাম্প ঘুরে দেখে শিশুদের সঙ্গে কথা বলে তাদের অভিজ্ঞতা, তাদের সঙ্কট তিনি বোঝার চেষ্টা করেন। 

বৃহস্পতিবার কক্সবাজার থেকে ঢাকায় এসে বিকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন এই অভিনেত্রী। বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর অতিরিক্ত প্রেস সচিব এম নজরুল ইসলাম পরে এ বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

তিনি জানান, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তার অভিজ্ঞতার কথা প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন।

“রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে শিশুদের পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া বলেন, একটা প্রজন্ম হারিয়ে যেতে বসেছে।”

যথাযথ শিক্ষার ব্যবস্থা না হলে এই শিশুরা চরমপন্থার দিকে ঝুঁকতে পারে বলেও প্রিয়াঙ্কা আশঙ্কা প্রকাশ করেন বলে  জানান নজরুল।

তিনি বলেন, “রোহিঙ্গারা বিপর্যয়ের মধ্যে আছে । যারা কর্মক্ষম তাদের কাজ নেই। ক্যাম্পের শিশুরা যে শিক্ষার যথাযথ সুযোগ পাচ্ছে না, সে কথাও প্রিয়াঙ্কা চোপড়া তুলে ধরেন।”

মিয়ানমারের রাখাইনে দমন-পীড়নের মুখে গত কয়েক দশকে চার লাখের মত রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে। আর গতবছর ২৫ অগাস্ট রাখাইনে নতুন করে দমন অভিযান শুরুর পর এসেছে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা।

এই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ যেভাবে আশ্রয় দিয়েছে- তাকে ‘অভূতপূর্ব’ হিসেবে বর্ণনা করে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া বলেন, কীভাবে মানবতার পাশে দাঁড়াতে হয়, তা বাংলাদেশের কাছে বিশ্বের শেখার আছে।

প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, নৃশংসতার মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা এই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে মানবিক কারণে।

ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গাদের জন্য সব ধরনের সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা বাংলাদেশের একার পক্ষে কঠিন, তারপরও বাংলাদেশ সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, এক লাখ রোহিঙ্গাকে শিগগিরই ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে। সেখানে তাদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে গত বছরের ২৩ নভেম্বর একটি সম্মতিপত্রে সই করেছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। ওই চুক্তি বাস্তবায়নে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখার কথাও বলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

তার অতিরিক্ত প্রেস সচিব এম নজরুল ইসলাম বলেন, “যেখান থেকে তারা (রোহিঙ্গা) এসেছে, সেখানে তাদের ফেরত পাঠালেই এ সমস্যর সমাধান সম্ভব বলে মন্তব্য কেরেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।”