মহেশখালীতে গাছ কাটা বন্ধের নির্দেশ হাই কোর্টের

তেলের ডিপো এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য কক্সবাজারের মহেশখালীর সংরক্ষিত বনের গাছ কাটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 May 2018, 03:50 PM
Updated : 21 May 2018, 03:50 PM

এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের বেঞ্চ সোমবার এ নির্দেশ দেয়।

রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী রাশেদুল হক খোকন, তানজিম আল ইসলাম ও মীর্জা সুলতান আল রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান।

আইনজীবী রাশেদুল হক খোকন ও তানজিম আল ইসলাম জানান, সংরক্ষিত বনভূমিতে তেলের ডিপো নির্মাণে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে গত ১২ মে হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে রিট আবেদন করেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. এ এম এস গোলাম কিবরিয়া।

সোমবার অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানির প্রস্তুতির জন্য সময় চাইলে আদালত রিট আবেদনটির শুনানি চলতি সপ্তাহের বাকি কর্মদিবসে না রেখে আগামী সপ্তাহে রেখে নির্দেশ দিয়েছে শুনানি পর‌্যন্ত সংরক্ষিত বনের গাছ কাটা বন্ধ রাখতে।

ডেপুটি আটর্নি জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সময় মঞ্জুর করে আদালত শুনানি পর‌্যন্ত সংরক্ষিত বনের গাছ কাটা বন্ধ রাখতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছে।”

আইনজীবী রাশেদুল হক খোকন বলেন, “বন বিভাগের আপত্তি উপেক্ষা করে কক্সবাজারের মহেশখালীর পাহাড়ি এলাকায় প্রায় ১৯২ একর সংরক্ষিত বনভূমিতে জ্বালানি তেলের ডিপো নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে সরকার।

“এ জন্য মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়নের সোনারপাড়া সংরক্ষিত বনের কয়েক হাজার গাছ কাটার অনুমোদন নিতে গত ২৭ মার্চ বিষয়টি মন্ত্রিসভায় পাঠায় পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়। গত ১৪ মে তার অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এরপর থেকে গাছ কাটা শুরু হয়েছে।”

খোকন বলেন, একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী বন বিভাগ এ ডিপো নির্মাণে আপত্তি জানিয়েছে। তার উপর পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই ডিপোটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে পরিবেশগত প্রভাবও নির্ণয় করা হয়নি।”

তিনি বলেন, “মহেশখালীতে আরও তিনটি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। তেলের ডিপো ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ফলে যে পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হবে তা শোষণে গাছের কোনো বিকল্প নাই। সেই গাছই কেটে ফেলা হচ্ছে। এতে স্থানীয়ভাবে প্রাণ-প্রকৃতি পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে, পরিবেশ বিপর‌্যস্ত হবে। আর পরিবেশের বিপরর‌্যয় ঘটলে অবধারিতভাবে তা আমাদের ভোগ করতে হবে।”

তেলের ডিপো নির্মাণে সরকারের গাছ কাটার সিদ্ধান্ত বন আইন ১৯২৭ এর স্পষ্ট লঙ্ঘন বলেও মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের এ আইনজীবী।