বেরোবির সাত বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চার মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 May 2018, 12:28 PM
Updated : 21 May 2018, 02:33 PM

শিক্ষক নিয়োগে গত ৩ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তির আলোকে নিয়োগ প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেয়।

‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর আইন ২০০৯’র ৫(৭) ও ৫(৪) ধারা লঙ্ঘন করে গত ৩ এপ্রিলের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া বন্ধে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইংরেজি, ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, অর্থনীতি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাছাই কমিটির সুপারিশকৃতদের নিয়োগ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

শিক্ষা সচিব, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, রেজিস্ট্রারকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এস এম মনিরুজ্জামান।

বাছাই কমিটির সুপারিশকৃতদের নিয়োগ না দিয়ে গত ৩ এপ্রিলের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত সপ্তাহে হাই কোর্টে রিট করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাছাই কমিটির সুপারিশকৃত মনজুর আরিফ, আনাস আলী ও মাহমুদুল হক।

আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি বিভাগে এক বছর আগে শিক্ষক নিয়োগের সাক্ষাৎকার নেওয়া হলেও তাদের নিয়োগ না দিয়ে নতুনভাবে নিয়োগের জন্য গত ৩ এপ্রিল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, যা বিশ্ববিদ্যায় আইনের লঙ্ঘন।

“বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগের বিধান অনুযায়ী বাছাই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারি নিয়োগ দেবে। বাছাই কমিটির সুপারিশের সঙ্গে সিন্ডিকেট একমত না হলে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের (রাষ্ট্রপতি) কাছে প্রেরণ করতে হয়। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তা না করে গত ৩ এপ্রিল নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।” 

বিষয়টি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর সংক্ষুব্ধ হয়ে তিন নিয়োগ প্রার্থী আদালতে রিট আবেদন করেন।

রিট আবেদন থেকে জানা যায়, গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতাসহ ১৫টি বিভাগে ২৫ জন প্রভাষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়।

এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে গত বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সাবেক উপাচার্য এ কে এম নূর-উন-নবী ১৫ বিভাগের মধ্যে সাতটি বিভাগের সাক্ষাৎকার-প্রক্রিয়া শেষ করেন।

বিভাগগুলো হলো বাংলা, ইংরেজি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা।

কিন্তু শিক্ষক নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ করা হয়নি এ অভিযোগ তুলে উচ্চ আদালতে রিট করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক তাবিউর রহমান প্রধান।

ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক উপাচার্য বাকি আট বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের সাক্ষাৎকার গ্রহণে বিরত থাকেন।

গত বছরের ৫ মে তার মেয়াদ শেষ হয়। এরপর ওই বছরের ১৪ জুন নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ উপাচার্য হিসেবে যোগ দেন। তার যোগদানের পর তাবিউর রহমান গত বছরের ৭ আগস্ট রিটটি প্রত্যাহার করে নেন।

এ অবস্থায় চলতি বছরের ৩ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে ওই সাত বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে আবার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।

সেখানে বলা হয়েছে, আগে যারা আবেদন করেছেন, তাদের নতুন করে আবেদন করার প্রয়োজন নেই।