কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন না হলে সোমবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক

বিকালের মধ্যে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি না হলে সোমবার থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2018, 10:06 AM
Updated : 13 May 2018, 10:26 AM

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রোববার সকালে এক বিক্ষোভ মিছিল শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুল হক নূর।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ৩২ দিন পার হলেও প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। … আমরা আর অপেক্ষা করতে চাই না। আজ বিকাল পাঁচটার মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না করা হলে কাল থেকে সারা দেশের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট চলবে। অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করা হবে।”

কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দৃশ্যত ক্ষুব্ধ শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে বলেন, “বারবার এই আন্দোলন ঝামেলা মিটাবার জন্য কোটা পদ্ধতি বাতিল; পরিষ্কার কথা; আমি এটাই মনে করি, সেটা হল বাতিল।”

কোটা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করার কথাও ওই দিন বলেন সরকারপ্রধান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব গত ১০ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছেছে। তবে রোববার দুপুর ১টা পর্যন্ত সেই কমিটি হয়নি।

কোটা ব্যবস্থা বাতিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার প্রজ্ঞাপনের দাবিতে রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে মিছিল।

নুরুল হক নূর বলেন, “সরকার যখন ডেকেছে, আমরা সাড়া দিয়েছি। ৭ মের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির কথা ছিল, কিন্তু এমনটা না হওয়ায় ছাত্ররা বিক্ষুব্ধ হয়েছে। বাংলার ছাত্র সমাজ তাদের অধিকার আদায়ে আর ছাড় দেব না। যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না করা হয়, তাহলে কঠোর আন্দোলনে যাব।

“প্রধানমন্ত্রী যখন কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন, তখন আমরা তার বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছি এবং আমাদের আন্দোলনকে স্থগিত করে আনন্দ মিছিল করেছি। কিন্তু তার ঘোষণার ২৭ দিন পার হয়ে গেলেও কোনো আমরা প্রজ্ঞাপন পাইনি। ছাত্রদের সাথে কেন এমন প্রহসন করা হচ্ছে?”

বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন ও যুগ্ম-আহ্বায়ক মুহম্মদ রাশেদ খান বক্তব্য দেন।

এর আগে বিক্ষোভ একটি বিক্ষোভ মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে শুরু হয়ে মধুর ক্যান্টিন, লেকচার থিয়েটার ভবন, সূর্যসেন হল, মুহসীন হল, নীলক্ষেত মোড় ঘুরে ভিসি চত্বর, ফুলার রোড, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর, হয়ে শাহবাগ গিয়ে শেষ হয় ৷

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী ‘ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার দাবি তুলেছিল। কোটায় প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে তা পূরণের দাবিও জানিয়েছিল তারা।

প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের কথা বলার পর তারা এখন সেই প্রজ্ঞাপন প্রকাশের দাবিতে রোববার দেশের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে।