একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ সংসদীয় আসনের ২৫টিতে সীমানায় পরিবর্তন এনেছে নির্বাচন কমিশন।
Published : 30 Apr 2018, 03:44 PM
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে সোমবার কমিশন সভার পর এক সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্ত জানান নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ৩০০ আসনের সীমানা গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। ২৭৫টি আসনের ক্ষেত্রে দশম সংসদের সীমানাই বহাল থাকছে। বাকি ২৫টি আসনে পরিবর্তিত সীমানায় ভোট হবে।
গত ১৪ মার্চ পুননির্ধারিত সীমানার খসড়ায় ৪০ আসনে পরিবর্তনের প্রস্তাব করে বাকি ২৬০টি আসনে দশম সংসদের সীমানা বহাল রাখার কথা বলা হয়। কিন্তু এরপর ৬০টি আসনের বিষয়ে আপত্তি বা আবেদন আসে।
এরপর ২১ থেকে ২৫ এপ্রিল এসব আপত্তির ওপর শুনানি শেষে ৬০টি আসনের মধ্যে ৩৫টির আপিল মঞ্জুর করে ইসি। ফলে সেসব আসনে দশম সংসদের সীমানাই বহাল থাকছে। বাকি ২৫টির আবেদন না মঞ্জুর হওয়ায় সেখানে সীমানা বদলে যাচ্ছে।
ইসির সহকারী সচিব রৌশন আরা জানান, পরিবরর্তিত ২৫ আসন হচ্ছে- নীলফামারী ৩, ৪; রংপুর১ ও ৩; কুড়িগ্রাম ৩ ও ৪; সিরাজগঞ্জ ১ ও ২; খুলনা ৩ ও ৪; জামালপুর ৪ ও ৫; নারায়ণগঞ্জ ৪ ও ৫; সিলেট ২ ও ৩; মৌলভীবাজার ২ ও ৪; ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৫ ও ৬; কুমিল্লা ৬, ৯ ও ১০; এবং নোয়াখালী ৪ ও ৫।
আসন সীমানা পরিবর্তনের কাজে হাত দেওয়ার আগে নির্বাচন কমিশন দেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সেখানে ২০১৪ সালের নির্বাচনের আসন সীমান্ত অবিকৃত রাখার পক্ষে মত দেয়। আর বিএনপি ২০০৮ সালের আগের আসন সীমানা ফিরিয়ে আনার দাবি জানায়।
পুনর্বিন্যস্ত আসন সীমানার তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আওয়ামী লীগের দাবি কিছু ক্ষেত্রে গৃহীত হয়েছে শুনানির মাধ্যমে; আবার কোনো কোনো দাবি গৃহীত হয়নি। অন্যদের বক্তব্যকে প্রধান্য দেওয়া হয়েছে।”
খসড়া প্রস্তাবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরের কয়েকটি আসনের নতুন সীমানা পরিবর্তনের কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত তা আর করা হয়নি।
এ বিষয়ে রফিকুল ইসলামের ব্যাখ্যা, “সীমানা নির্ধারণ আসলে জনগণের জন্য, জনপ্রতিনিধিদের জন্য এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জন্য। তাদের বক্তব্য ছাড়া সীমানা নির্ধারণ যৌক্তিক নয়। শুনানিতে যে বক্তব্য এসেছে সেগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
তিনি বলেন, “ঢাকায় পরিবর্তনের চিন্তা করেছিলাম। একটা আসন পরিবর্তন করলে পাঁচ সাতটা পরিবর্তন হয়ে যায়। একটার পক্ষে-বিপক্ষে আমরা মতামত পেয়েছি। অন্য পাঁচটা আসনে কোনোক্রমেই সমর্থন করে না তারা।”
একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অক্টোবরের মধ্যে ৯০ দিনের ক্ষণ গণনা শুরু হবে বিবেচনা করেই সীমানা চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার রফিকুল।
তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি, মাথার মধ্যে অনেক বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সময় আছে ৫ মাস। ওটা মাথায় নিয়েও কিন্তু সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তাই বড় ধরনের পরিবর্তন আনলে যৌক্তিক হবে কি না, এসব ভাবতে হয়েছে।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা ইতোমধ্যে বলেছেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদ ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি শেষ হবে। তাই ডিসেম্বরের শেষের দিকে অথবা ২০১৯ সালের প্রথম দিকে যে কোনো দিন একাদশ সংসদ নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করা হবে।
এর অংশ হিসেবে আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে একাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হবে।
অন্যদের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, ইসির যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জামান ও আবুল কাসেম, উপ সচিব ফরহাদ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
পুরনো খবর