রোববার এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, গতবছর মন্ত্রিসভায় খসড়া অনুমোদনের পর এখন তিনটি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলাপ আলোচনায় চলছে।
“আগামী বাজেট অধিবেশনেই যাতে সংসদে তোলা যায়, সেই প্রস্তুতি আছে।”
ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণি পাসের বাধ্যবাধকতা এবং গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে শাস্তির বিধান রেখে নতুন ওই আইনের খসড়া গত বছর ২৭ মার্চ মন্ত্রিসভার নীতিগত অনুমোদন পায়। পরে সেটি ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয় আইন মন্ত্রণালয়ে।
তার কয়েক সপ্তাহ আগে দুই চালকের সাজার রায়ের প্রতিবাদে সারা দেশে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরু হলে দুই দিনে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। ঢাকার গাবতলীতে শ্রমিকরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়ায়।
মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদনের পর পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলো প্রস্তাবিত ওই আইনের বিরোধিতায় সোচ্চার ভূমিকা নেয়।
দেশের শ্রমিক সংগঠনগুলোর শীর্ষ ফোরাম বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি নৌমন্ত্রী শাজাহান খানও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা রক্ষায় ‘সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য’ হয়- এমন আইন প্রণয়নের দাবি জানান।
এই পরিস্থিতিতে প্রস্তাবিত আইনটি গত এক বছরেও আইন মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র পায়নি।
তিনি বলেন, “যেহেতু এটা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইন, সেহেতু আমরা এ আইনটি নিয়ে সকল স্টেক হোল্ডারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছি।”
সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ আহত বা নিহত হলে চালক কিংবা দায়ী ব্যক্তির কী ধরনের শাস্তি হবে, সে বিধান না রেখেই সড়ক পরিবহন আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে- এমন সমালোচনার বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা।
জবাবে আনিসুল হক বলেন, “চালক কিংবা দায়ী ব্যক্তির শাস্তির বিষয়টি ফোকাস হয়নি- এটা ঢালাওভাবে বলা যাবে না। আমরা আইনটির এ টু জেড সব কিছু দেখছি। এটা শুধু একটা দিক দিয়ে দেখলে হবে না।”
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে চালকদের প্রশিক্ষণ, লাইসেন্স নেওয়া, গাড়ির ফিটনেস ও সড়ক ব্যবস্থাপনায় মনযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, “সব দিক থেকে একটা পরিপূর্ণ আইন করার জন্য সময় লাগছে। এমন না যে এখন কোনো আইন নাই। যুগপোযোগী আইন করতে একটু সময় লাগছে।“
আরেক প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, তরেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাচনা চলছে।
বন্দিবিনিময় চুক্তি না থাকলে তারেক রহমানকে কীভাবে যুক্তরাজ্য থেকে ফিরিয়ে আনা হবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “বন্দিবিনিময় চুক্তি না থাকলেও এ চুক্তি করতে তো বাধা নেই। তাছাড়া ‘মিউচ্যুায়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স অ্যাক্ট বলে একটা আইন আছে। সে আইনের আলোকে কিছু কিছু অপরাধীদের কিন্তু আমরা আনতে পারি। সেই অ্যাক্ট আমাদের দুই দেশেরই আছে। এটা কিন্তু জাতিসংঘের ধার্যকৃত একটা আইন। সেই সহযোগিতাও দুই দেশের মধ্যে আছে।”
বিচার প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মুসা খালেদের সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকও বক্তব্য দেন।
প্রশিক্ষণার্থী বিচারক ও কর্মকর্তারা ছাড়াও ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।